রিয়াজ উদ্দিন:
কক্সবাজারে অস্বাস্থ্যকর অনিরাপদ ফুডগ্রেডবিহীন ড্রামে ভোজ্য তেল ব্যবহারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় কক্সবাজার পৌরসভার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সড়ক চৌরাস্তা মোড়ে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ক্যাব) কক্সবাজার জেলা শাখা ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য শামশুল হক শ্রাবণের সঞ্চালনায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন, কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ক্যাব) কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি, পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা(ধরা), কক্সবাজার জেলা শাখার আহ্বায়ক, কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি, কক্সবাজারের জনবহুল পত্রিকা দৈনিক রূপালী সৈকত এর প্রকাশক ও সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা(ধরা), কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ন-আহ্বায়ক সাংবাদিক তৌহিদ বেলাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমীর দাশ, কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ক্যাব) কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্য আমিন উল্লাহ, শামশুল আলম শ্রাবণ, মোহাম্মদ হাসান, রতন দাশ, ফয়সাল মাহমুদ সাকিব, সাংবাদিক জিসান, ফরিদুল আলম রনি, ইয়াসমিন মুন্নি, উম্মে হাবিবা শিরু, মুক্তা প্রমুখ।
কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ক্যাব) কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ভোজ্যতেল সংরক্ষণে ব্যবহৃত অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা ড্রাম ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ড্রাম ওয়েলে ভিটামিন ‘এ’ এর ঘাটতি থাকে। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে জনিত রোগ যেমন-রাতকানা, অন্ধত্ব, গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা। রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বোতলের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের প্রচলিত অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা ড্রামে ভোজ্যতেল বিক্রি, বিতরণ ও বাজারজাত অব্যাহত রাখায় জনসাধারণের সঠিক মাত্রার (১৫-৩০ পিপিএম) ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এছাড়া ড্রামে খোলা তেল বিক্রি বিতরণে ভেজাল মিশ্রিতকরণের সুযোগ থাকায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ি সয়াবিন তেলের নামে পাম অয়েল অথবা পাম অলিন বিক্রি করে জনসাধারণকে প্রতারণা করে আসছে।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর কক্সবাজার জেলা সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে খোলা বাজারে ব্যবহৃত কেমিক্যালের ড্রামে তেল পরিবহন করায় তেলের গুণগতমানও ঠিক থাকে না। তেলের ড্রাম পরিস্কার করার সুয়োগ না থাকা এবং একই ড্রাম বারবার ব্যবহার করায় মারাত্মক রোগ জীবাণু ছড়ানোর আশংকা থাকে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। সুস্থ ও কর্মক্ষম জাতি গঠনে খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বিক্রি, বিতরণ বন্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে।
এসময় বক্তরা বলেন, বর্তমানে যে প্লাস্টিক ড্রামগুলোতে ভোজ্যতেল বহন করা হয় সে ড্রামগুলো ফুড- গ্রেড নয় এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনিরাপদ। ড্রামগুলো থেকে কেমিক্যাল এর অবশিষ্টাংশ দূর করা যায় না, এই ড্রামগুলোতে সাধারণত রাসায়নিক দ্রব্য বাজারজাত করা হয়, ড্রামে রাখা ভোজ্যতেলের মান ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত লেবেলিং করা থাকে না। তাছাড়া ঐই সমস্ত ড্রামে রাখা ভোজ্য তেল কার উৎপাদিত তা দেখা বা বোঝা যায় না। তাই ক্ষতিকারক উক্ত প্লাস্টিক ড্রামগুলো নিষিদ্ধ করার দাবী জানান বক্তারা।
বক্তারা আরো জানান, এই প্লাস্টিক ড্রামগুলোতে স্পষ্ট ও দৃশ্যমান সমৃদ্ধকরণ প্রতীক ব্যবহার করা হয়না এবং বিএসটিআই এর খাদ্যমানের প্রতীক ব্যবহার করা হয় না। তাছাড়াও এই ড্রামগুলোতে আইন মোতাবেক ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ এই বিবৃতি থাকেনা।
তারা সকলেই একযোগে উক্ত মানববন্ধনে অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ ও ফুডগ্রেডবিহীন ড্রামে ভোজ্য তেল ব্যবহার নিষিদ্ধের জোর দাবি জানান। এসময় উক্ত মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।