
মুহাম্মদ আনিসুল ইসলাম, উখিয়া:
স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বিশেষায়িত এবং আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০২২ সালের ৫ ই জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: এনামুর রহমান এমপি হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ও ইউএনএইচসিআর-এর অর্থায়নে অন্যান্য এনজিওর সাথে মূল সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। শুরুতে মায়ানমার নাগরিকের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকরা আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন সচেতনমহল।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন উখিয়া উপজেলার সভাপতি বেলাল উদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন গণস্বাস্থ্য
কেন্দ্র পরিচালিত উখিয়া স্পেশালাইজড হসপিটাল যেন একটি গণ হয়রানি কেন্দ্র। তিনি উখিয়া বাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান। উখিয়ার বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী এ. আর. হারুন কিছুদিন আগে চোখের চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ব্যবস্থাপত্র পত্র অনুযায়ী কোন ওষুধ দিতে পারেনি, অথচ স্থানীয়রা দাবি করেন রোহিঙ্গারা সেবা নিতে আসলে তাদের জামাই আদর করে চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ নুর জানান তার ছেলের বুকে ব্যাথা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এখানে এগুলোর কোন চিকিৎসা হয় না জানিয়ে, উখিয়া বাজারে প্রাইভেট ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত একজন এমবিবিএস ডাক্তার জানিয়েছেন উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালে হোস্ট কমিউনিটির কোন রোগীকে না পাঠানোর জন্য তার সহকর্মীকে ফোন করে জানান, যা তিনি নিজে শুনেছেন। এই প্রতিবেদন লেখার সময় তিনি তার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার কথা আমাকে জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা দাবি করেন অত্র হাসপাতালের কো-অর্ডিনেটর এবং ডাক্তারদের সাথে বেসরকারি হাসপাতাল গুলির যোগসাজস রয়েছে। এই হাসপাতালে শুরুর দিকে লোকজন বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা এখানে করতে পেরেছিল বিধায়, প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে স্থানীয় রোগীদের আর তেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হয়নি। এখন কৌশলে রোগীদের চিকিৎসা নাই মর্মে জবাব দেওয়ায় লোকজন অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে ঝুকছে। সচেতন মহল মনে করেন উখিয়া স্পেশালাইজড হসপিটালের কো- অর্ডিনেটর এবং ডাক্তারদের উখিয়ার প্রাইভেট হাসপাতালগুলির যোগসাজস রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে অত্র হাসপাতালের গণস্বাস্থ্যের পক্ষে কো-অর্ডিনেটর ডাক্তার নিরান্ত কুমার দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান স্পেশালাইজড হসপিটাল যেন বিভিন্ন দামি দামি পরীক্ষা-নিরীক্ষা গুলো যেন না করে প্রাইভেট হসপিটাল থেকে এরকম উপদেশ আসার কথা স্বীকার করে কৌশলে যোগসাজশের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপাস খীসা জানিয়েছেন চিকিৎসা সবার জন্য উন্মুক্ত। স্থানীয় রোগীদের কৌশলে চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করবেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান বলেছেন, প্রাইভেট হাসপাতালের সাথে উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালের কোর্ডিনেটর ও ডাক্তারদের যোগসাজসের বিষয়টি ভ্রান্ত ধারণা মনে করে তিনি বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তবে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
দাতা সংস্থা হিসেবে ইউএনএইচসিআর
-এর হট লাইন নম্বর বন্ধ থাকায় ওনাদের কোন প্রতিনিধির বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ জাতীয় আরো খবর..