বিশেষ প্রতিবেদক:
রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার মামলায় জেল ফেরত আসামী এবং রোহিঙ্গা ভিত্তিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত সহ বিভিন্ন অপরাধের মাস্টার মাইন্ড রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী রুহুল আমিন এখন নিরাপদে থাকছেন কক্সবাজার পৌর এলাকায় ৭ নং ওয়ার্ডের জিয়া নগর এলাকায়। সেখানে তিনি সরকারি খাস জমি দখল করে গড়ে তুলেছেন ২ টি আলিশান বাড়ি। প্রতিদিন এই রুহুল আমিনের বাড়িতে আসা যাওয়া করছে ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা। মাদক ব্যবসা সহ নিয়ন্ত্রণ করছেন অপরাধের নেটওয়ার্ক। কেউ তার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমের বলেন আমি গোয়েন্দা সংস্থার সোর্স। সব বড় বড় মেজর পুলিশ সবাই আমাকে নিয়ে অভিযানে যায়। তাই আমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। মাঝে মধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনির সোর্স পরিচয় দিয়ে স্থানীয়দের মামলার হুমকি দিয়ে নাজেহাল করেন বলে জানান স্থানীয়রা।
কক্সবাজার শহরের পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা নাছির উদ্দিন, ব্যবসায়ি করিম উল্লাহ সহ অনেকে জানান,জিয়া নগর এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে বসবাস করছেন রুহুল আমিন নামের এক রোহিঙ্গা নেতা। সে উক্ত এলাকায় সরকারি খাসজমিতে নিজের একটি এবং তার পাশের স্ত্রী বোনের নামে গড়ে তুলেছেন দুটি বহুতল ভবন। তারা বলেন,আমাদের জানা মতে রুহুল আমিন ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর বৌদ্ধ মন্দির হামলায় জড়িত। রুহুল আমি সে সময় নাইক্ষ্যংছড়িতে থাকতো। সেই মামলায় সে কয়েক বছর জেলও খেটেছে। বর্তমানে জিয়ানগর এলাকায় তার বাড়িতে এখন মিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে প্রতিনিয়ত ক্যাম্প থেকে তার বাড়িতে রোহিঙ্গারা আসা যাওয়া করে তারা অবাধে ইয়াবা আনা নেওয়া করে। এছাড়া শুনেছি ক্যাম্পে মুক্তিপণ আদায়ের টাকাও তার মাধ্যমে লেনদেন করে অনেকে। আমরা স্থানীয়রা তার সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে আমার সাথে কক্সবাজার ঢাকা সহ সব এলাকার বড় বড় মেজর,ব্রিগেডিয়ার,পুলিশ সবার সাথে সম্পর্ক আছে। তারা আমাকে তাদের সোর্স হিসাবে নিয়োগ করেছে। আমি যা করি সব তারা জানে। তখন ভয়ে আমরা কেউ কিছু বলিনা। তবে এই রোহিঙ্গা জঙ্গিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি। সে একজন রোহিঙ্গা হয়ে স্থানীয়দের হুমকি ধমকি দেয় প্রকাশ্য আইনশৃংখলা বাহিনির সোর্স পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়ায়।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে রুহুল আমিনে কাছে পরিচয় গোপন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার জাতীয় পরিচয় পত্র আছে,যার নাম্বার ৭৭৮০০৯৪৪৫৯। ঠিকানা পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ তারাবনিয়ারছড়া আর আমার স্ত্রীর নাম ফরিদা বেগম তার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার ৬৪৪৯৮৫২৪৮৯, ঠিকানা জিয়ানগর পাহাড়তলী। এগুলো অনেক টাকা খরচ করে করেছি। তিনি নিজেই স্বীকার করে বলেন, আমি বৌদ্ধ মন্দির হামলার মামলার আসামী এখন জামিনে আছি। আমার অনেক আত্বীয় স্বজন ক্যাম্পে আছে সেটাও সত্য,তবে বাংলাদেশের সরকারের জন্য কাজ করি। আমি সমস্ত আইনশৃংখলা বাহিনীর সোর্স হিসাবে কাজ করি। সব বড় বড় অফিসার আমাকে চিনে। এ সময় তিনি রোহিঙ্গারা তাদের অধিকারের জন্য কাজ করছি যতদিন তারা তাদের অধিকার পাবে না। এখানেই থাকবে তাছাড়া তিনি বাংলাদেশকে পুরাতন আরকান রাজ্য বলেও দাবী করেন। পরে অবশ্য সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সব কথা অস্বীকার করেন এবং তাকে সহায়তা করার এবং সংবাদ না করার অনুরোধ করেন।
এ সময় পাহাড়তলী এলাকার ব্যবসায়ি মো: সেলিম,নুরুল আবছার সহ অনেকে বলেন,আমাদের এই এলাকাকে সবাই মিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প হিসাবে চিনে এখানে প্রতিদিন অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যাতায়ত করে। আবার অন্তত ৫ হাজার রোহিঙ্গা এখানে জাতীয় পরিচয় পত্র,পাসপোর্ট,জন্মনিবন্ধন করে স্থায়ী হয়েছে। এ গুলোর জন্য জনপ্রতিনিধিরাই দ্বায়ী। আর রোহিঙ্গা নেতা রুহুল আমিন হচ্ছে রোহিঙ্গাদের অন্যতম নেতা ক্যাম্প এসে প্রথমে রোহিঙ্গারা তার আশ্রয়ে থাকে পরে কাজ কর্ম করে,প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে অনেকে বিদেশে আবার অনেকে অন্য জেলায় স্থায়ী হয়ে যায়। রুহুল আমিনের স্ত্রী ছেলেরা সবাই রোহিঙ্গা,তার এক ছেলে আজিজ শহরের লিংক রোড় উঠনি এলাকার বিসিক আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে চাকরী করে। সেখানে আজিজের মাধ্যমে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিশু ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করছে। সে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও রোহিঙ্গা তারা আবার সম্প্রতী জেলা শ্রমিক লীগ নেতা জহির উল্লাহ হত্যা মামলার সাথে জড়িত ছিল বলে লোকমুখে প্রচার আছে। রুহুল আমিনের এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছে পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘর এলাকার সেলিমের কাছে সেই সেলিম শহরের বাজারঘাটায় শুটকী মাছের দোকান করে। সেই সেলিমও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এছাড়া রুহুল আমিনের অন্যতম সঙ্গি হচ্ছে এখানকার পরিচিত রোহিঙ্গা হাফেজ আহামদ,রশিদ আহামদ,মৌলবী হাবিব,বর্তমানে শহরের গুদারপাড়ার বাসিন্দা মৌলবী শফিক যে রোহিঙ্গা জঙ্গি হিসাবে আটক হয়েছিল,তার পাশেই হাফেজ জাবের আর তাদের সবার উপরে থাকে হাফেজ ছালাউল।
এদিকে স্থানীয়দের দাবী আত্মস্বীকৃত রোহিঙ্গা রুহুল আমিন সহ তার পরিবারের সকলের জাতীয় পরিচয় পত্র বাতিল করা সহ এলাকার পুরাতন রোহিঙ্গার সনাক্ত করে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র বাতিল করে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এক সময় এখান থেকে তারা সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হতে পারে।