মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পানিরছড়া এলাকায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণের তথ্য পাওয়া গেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সম্প্রতি সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি ১২নং পাহাড়ি জমিতে হুলুস্থুল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কাউছার। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রথমে রাগান্বিত ও পরে দাম্ভিকতার সুরে সাংবাদিকদের সাথে আচরণ করলেন ভবণ মালিক কাউছার ও তার ছোট ভাই। পরে নামসর্বস্ব কিছু নথি এনে সাংবাদিকদের হাতে দেন তিনি।
২০০০ সালের জাতীয় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং পরিবেশ অধিদফতরের বিধান অনুযায়ী, কোনো পাহাড় কাটা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য। পাহাড় কাটলে ভূমিধস, জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের বিনাশসহ নানা রকম পরিবেশগত দুর্যোগের সম্ভাবনা থাকে। তবুও বছরের পর বছর ধরে নানা অজুহাতে মহেশখালীর বিভিন্ন পাহাড়ে অবৈধ দখল ও নির্মাণ কাজ চলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহেশখালী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় এখানকার পাহাড়গুলোর পরিবেশগত গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে বহু বিরল প্রজাতির বৃক্ষ, পাখি, বন্যপ্রাণী এবং জলাশয় রয়েছে। এসব পাহাড় কেটে নির্মাণ হলে পরিবেশ শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, দীর্ঘমেয়াদে মানুষ ও জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
উপজেলা বন কর্মকর্তা এনামুল হক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক ত্রিপুরা চাকমার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি। ফলে সরকারি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগ ও এসিল্যান্ড অফিসকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করেই ভবন নির্মাণ করছেন কাউছার।
স্থানীয়দের অভিযোগ-প্রশাসনের চোখের সামনে এমন কর্মকাণ্ড চললেও তা ঠেকাতে দৃশ্যত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। বন বিভাগ, এসিল্যান্ড ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভবনটি তৈরি করছেন কাউছার। স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ, শিক্ষক ও সাংবাদিকেরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এভাবে পাহাড় কাটার ঘটনা যদি চলতেই থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মহেশখালীতে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে। প্রশাসনকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।