রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গর্জনিয়া বিশাল তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে মুফতি আমির হামজা মহেশখালীতে পাহাড় কেটে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন রামু সমিতির সাধারণ সভা ও পরিবারিক মিলনমেলা অনুষ্টিত আলহামদুলিল্লাহ আমার পেটে কোন ক্ষিধা নেই, আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট দিয়েছে: সভাপতি জাহেদুল চকরিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় নিখোঁজ গরু ব্যবসায়ীর লাশ ১৮ঘন্টা পর নদী থেকে উদ্ধার চকরিয়ায় সাংবাদিক শাহ আলমের উপর হামলা ও রাইচমিল লুটের ঘটনায় দুই মামলা আসামি হলেই গ্রেপ্তার নয়, মানতে হবে নতুন নির্দেশনা কক্সবাজারের সংকট-সম্ভাবনার কথা বলতে “আওয়াজ”র আত্মপ্রকাশ জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাত, নাগরিক কমিটির নেত্রী বহিষ্কার। প্রবেশপত্র না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি উখিয়ার ১৩ শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক আটক

মহেশখালীতে পাহাড় কেটে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন

হ্যাপী করিম, মহেশখালী
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৫ বার পঠিত
হ্যাপী করিম, মহেশখালী:
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পানিরছড়া এলাকায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণের তথ্য পাওয়া গেছে।
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য যাচাই করতে গেলে এর সত্যতা মেলে. পাহাড় কেটে দালানটি নির্মাণ করছেন ওই এলাকারই মৃত শফিউল আলমের ছেলে কাউছার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাস্থলে গেলে ভবনের মালিক কাউছার হোসেন প্রথমে রাগান্বিত হয়ে ওঠেন। পরে সংবাদকর্মীদের সামনে দাম্ভিক ভঙ্গিতে কিছু নথিপত্র দেখিয়ে দাবি করেন, ‘এই জায়গা আমার দাদার বন্দোবস্তি নেওয়া। ডিসি অফিস ও বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে কাজ করছি।

শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সম্প্রতি সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি ১২নং পাহাড়ি জমিতে হুলুস্থুল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কাউছার। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রথমে রাগান্বিত ও পরে দাম্ভিকতার সুরে সাংবাদিকদের সাথে আচরণ করলেন ভবণ মালিক কাউছার ও তার ছোট ভাই। পরে নামসর্বস্ব কিছু নথি এনে সাংবাদিকদের হাতে দেন তিনি।

পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কাউছার জানান- ডিসি ও বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে বাড়ি করছি। এ জায়গা আমাদের পূর্বপুরুষদের। আমি ওয়ারিশ সূত্র জমির মালিক হয়েছি। পাহাড় কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি কাউছার। পরিবেশ রক্ষা আইন অনুযায়ী পাহাড় কেটে কোনো স্থাপনা নির্মাণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি অসংলগ্ন ও এড়িয়ে যাওয়ার মতো উত্তর দেন।

২০০০ সালের জাতীয় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং পরিবেশ অধিদফতরের বিধান অনুযায়ী, কোনো পাহাড় কাটা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য। পাহাড় কাটলে ভূমিধস, জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের বিনাশসহ নানা রকম পরিবেশগত দুর্যোগের সম্ভাবনা থাকে। তবুও বছরের পর বছর ধরে নানা অজুহাতে মহেশখালীর বিভিন্ন পাহাড়ে অবৈধ দখল ও নির্মাণ কাজ চলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মহেশখালী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় এখানকার পাহাড়গুলোর পরিবেশগত গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে বহু বিরল প্রজাতির বৃক্ষ, পাখি, বন্যপ্রাণী এবং জলাশয় রয়েছে। এসব পাহাড় কেটে নির্মাণ হলে পরিবেশ শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, দীর্ঘমেয়াদে মানুষ ও জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।

উপজেলা বন কর্মকর্তা এনামুল হক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক ত্রিপুরা চাকমার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি। ফলে সরকারি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগ ও এসিল্যান্ড অফিসকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করেই ভবন নির্মাণ করছেন কাউছার।

স্থানীয়দের অভিযোগ-প্রশাসনের চোখের সামনে এমন কর্মকাণ্ড চললেও তা ঠেকাতে দৃশ্যত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। বন বিভাগ, এসিল্যান্ড ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভবনটি তৈরি করছেন কাউছার। স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ, শিক্ষক ও সাংবাদিকেরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এভাবে পাহাড় কাটার ঘটনা যদি চলতেই থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মহেশখালীতে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে। প্রশাসনকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs