রূপালী ডেস্ক:
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, সংলাপের নামে বিএনপি আণুবীক্ষণিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে। এসব দলের সঙ্গে বৈঠক করে যখন তারা বৃহত্তর ঐক্য গঠনের কথা বলে, তখন মানুষ হাসে। সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদন–২০২১ গ্রহণ শেষে হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন। প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ২০১৮ সালেও ডানপন্থী-বামপন্থী, অতি ডান-অতি বাম সব দলের সঙ্গে সংলাপ করে একটি বড় ঐক্য করেছিল। সেই ঐক্যের ফল হচ্ছে বিএনপির মাত্র পাঁচটি আসন। গতকাল তারা বৈঠক করেছে কল্যাণ পার্টির সঙ্গে। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান আছে, মহাসচিব যে কে, আমি জানি না। মির্জা ফখরুল ইসলামও জানেন কি না, জানি না। এ ধরনের দলের সঙ্গে বৈঠক সংবাদ পরিবেশন ছাড়া কিছু নয়। সম্প্রতি বিএনপির মিছিল–সমাবেশে পুলিশের মারমুখী অবস্থানের বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করা। আমরা আমাদের দলকে সংযতভাবে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। পুলিশও বিএনপির যুদ্ধংদেহী মনোভাব, সংঘাতের অপচেষ্টাকে অত্যন্ত সংযতভাবে মোকাবিলা করছে। কিন্তু তারা (বিএনপি) যদি এটি অব্যাহত রাখে, জনগণ তাদের আগে যেভাবে প্রতিহত করেছিল, তা–ই করবে।’
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি তো নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য যারা রাষ্ট্রদূত ছিলেন এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতেরাও এ নিয়ে কথা বলেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে একমত। আমরা স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন চাই। এটি শুধু সরকারি দলের দায়িত্ব নয়, এ দায়িত্ব সব দলের।…বিদেশি রাষ্ট্রদূতেরা নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দিতে পারেন, সেটি যেন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মতো না হয়। একই সঙ্গে কূটনৈতিক শালীনতাও যেন লঙ্ঘন না হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৩-১৪ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। এর সঙ্গে নানা সমস্যা, জটিলতাও তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন নেই, এমন অনলাইন পত্রিকাকে সাংবাদিক নামে পরিচয়পত্র দিতে দেখা যায়। অনেক পত্রিকা আছে, যেগুলো বের হয় না। সাংবাদিকদের নিয়োগ দেওয়া হয় কিন্তু বেতন দেয় না। সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করেছি। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের একটা ডেটাবেজ তৈরি করার জন্য প্রেস কাউন্সিলকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম।’
প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি সম্পাদক এম জি কিবরিয়া চৌধুরী, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রাণী, প্রেস কাউন্সিলের সচিব শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।
এর পরপরই জাতীয় প্রেসক্লাবে বরেণ্য সাংবাদিক তোয়াব খানের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তোয়াব খান বাংলাদেশের ইতিহাসের একজন কিংবদন্তি সাংবাদিক। তাঁর হাত ধরে দেশের বহু প্রথিতযশা সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে। তাঁর লেখনী আমাদের দেশ ও জাতিকে উপকৃত করেছে। তাঁর মৃত্যু শুধু সাংবাদিক জগৎ নয়, পুরো জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’