রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গর্জনিয়া বিশাল তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে মুফতি আমির হামজা মহেশখালীতে পাহাড় কেটে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন রামু সমিতির সাধারণ সভা ও পরিবারিক মিলনমেলা অনুষ্টিত আলহামদুলিল্লাহ আমার পেটে কোন ক্ষিধা নেই, আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট দিয়েছে: সভাপতি জাহেদুল চকরিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় নিখোঁজ গরু ব্যবসায়ীর লাশ ১৮ঘন্টা পর নদী থেকে উদ্ধার চকরিয়ায় সাংবাদিক শাহ আলমের উপর হামলা ও রাইচমিল লুটের ঘটনায় দুই মামলা আসামি হলেই গ্রেপ্তার নয়, মানতে হবে নতুন নির্দেশনা কক্সবাজারের সংকট-সম্ভাবনার কথা বলতে “আওয়াজ”র আত্মপ্রকাশ জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাত, নাগরিক কমিটির নেত্রী বহিষ্কার। প্রবেশপত্র না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি উখিয়ার ১৩ শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক আটক

প্রবেশপত্র না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি উখিয়ার ১৩ শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক আটক

রিয়াজ উদ্দিন
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৯ বার পঠিত

রিয়াজ উদ্দিন:

কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যাপীঠের ১৩ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনেই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেনি তারা।

  • শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুস তিন দফায় জনপ্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন ফরম পূরণের নামে। এমনকি পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা বলে আরও ৭০০ টাকা করে আদায় করেন।

এ ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীদের স্বজন ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুসকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুস তিন দফায় জনপ্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন ফরম পূরণের নামে। এমনকি পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা বলে আরও ৭০০ টাকা করে আদায় করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র নিতে বিদ্যালয়ে গেলে গেটে তালা ঝুলতে দেখে। এতে কান্নায় ভেঙে পড়ে তারা এবং পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামে।

কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যাপীঠ এখনো একাডেমিক স্বীকৃতি পায়নি। ওই শিক্ষার্থীদের রুমখাঁ পালং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় তাদের ফরম পূরণ করা হয়নি।

পরবর্তীতে তারা প্রধান শিক্ষক ও এক দালালের প্রতারণার শিকার হয়। শিক্ষার্থীদের সমস্যার বিষয়টি আগেভাগে জানানো হলে সমাধানের সুযোগ ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এক পরীক্ষার্থী উম্মে হাফসা জানান, ‘রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপের নামে আমাদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার আগের দিন বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষার দিন সকালে আমাদের প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি। আমরা যেকোনোভাবে পরীক্ষায় অংশ নিতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মা—বাবার সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে এই বিদ্যালয়। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

পরীক্ষার্থীরা আরও জানায়, রুমখাঁ পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশ্ন অনুযায়ী তাদের টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। প্রয়োজনের সময় তারা অতিরিক্ত অর্থ দিলেও ফরম পূরণ হয়নি এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের প্রবেশপত্র দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়।

বিক্ষোভের সময় ঘণ্টাখানেক মরিচ্যা—পাতাবাড়ী সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়।

অভিভাবক ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের পরিচালক জহির উদ্দিন, প্রধান শিক্ষকসহ যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আমাকে বিষয়টি জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে ডিসি স্যার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। যেহেতু শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি, তাই বোর্ড এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।’

তিনি আরও জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি পরবর্তী পরীক্ষায় তারা অংশ নিতে পারে কিনা। এটি ঠান্ডা মাথায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs