রিয়াজ উদ্দিন:
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণের সরকারি সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়েছেন দ্বীপবাসী। কিন্তু বিকল্প হিসেবে ভ্রমণ পিপাসুরা দীপাঞ্চল হিসেবে বেছে নিচ্ছেন মহেশখালীকে। জেলার একটি পাহাড়ি দ্বীপ হিসেবে কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে সাগরের মাঝে অবস্থিত। প্রায় ৩৬২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মহেশখালী উপজেলায় সোনাদিয়া, মাতারবাড়ি, ধলঘাটা নামে ৩টি দ্বীপ রয়েছে। ১৮৫৪ সালে গড়ে ওঠা এই দ্বীপ পান, মাছ, শুটকি, চিংড়ি, লবণ ও মুক্তার উৎপাদনের কারনে সুনাম অর্জন করলেও এখানকার মূল আকর্ষন মিষ্টি পান। মহেশখালী এই মিষ্টি পানের জন্যে দেশ জুড়ে বিখ্যাত।
মহেশখালী বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ। এই দ্বীপটি আবার ৩টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতি বছরের ফাল্গুন মাসে এই দ্বীপে আয়োজন করা হয় আদিনাথ মেলা। মহেশখালীর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম —সোনাদিয়া দ্বীপ, আদিনাথ মন্দির ও আদিনাথ মেলা, বৌদ্ধ কেয়াং বা মন্দির, রাখাইন পাড়া, স্বর্ণ মন্দির, মৈনাক পর্বত, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
মহেশখালী ১ নং জেটি ঘাট থেকে এখানকার বিখ্যাত মিস্টি পান মুখে দিয়ে অটোরিক্সা রিজার্ভ করে দুপাশে ম্যানগ্রোভ বন রেখে জেটি ধরে প্রথমেই চলে যান বড় বৌদ্ধ কেয়াং বা মন্দির। এর ভেতরে আছে বেশ কয়েকটি বৌদ্ধ মন্দির। বেশ কয়েকটি পিতলের বৌদ্ধ মূর্তিও আছে এখানে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ, মাথায় হাতে শায়িত বুদ্ধ এবং দণ্ডায়মান বুদ্ধ ইত্যাদি। পথে যেতেই পানের বরজ চোখে পড়বে।
বৌদ্ধ মন্দির থেকে বেরিয়ে সরাসরি চলে যান স্বর্ণমূর্তি দেখতে। তারপর শ্রী শ্রী আদিনাথ মন্দিরে চলে যান। পাহাড় বেয়ে যেতে হবে মৈনাক পাহাড়ে। লোকমুখে প্রচলিত, ৫০০ থেকে ৬০০ বছরের পুরোনো মন্দিরের কারুকার্য সুন্দর। মৈনাক পাহাড় থেকে ম্যানগ্রোভ বন, সমুদ্র এবং পুরো মহেশখালী দেখতে পাওয়া যায়। পাহাড়ের ঢালে পানের চাষ দেখা যায়।
মন্দির থেকে নেমে পাশে আরেকটি জেটি ধরে সমুদ্রের কাছে চলে যেতে পারবেন। কেওড়া, গোলপাতাসহ সুন্দরী গাছের মনোরম দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। ছবি তোলার জন্যে পারফেক্ট জায়গা।
সেখান থেকে ফিরে আসার সময় লবণ চাষাবাদ করার জায়গা আর শুটকি পল্লীতেও ঘুরে আসবেন।