টেকনাফে এন ও সির লাইসেন্স ছাড়া এল পি জি গ্যাস বিক্রির অভিযোগে টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরফানুল হক চৌধুরী নাফ পেট্রোল পাম্পের এল পি জি অটো ষ্টেশনে অভিযান পরিচালনা করেন।
বুধবার (২৪মে) দুপুরে টেকনাফ পৌর শহরের নাফ পেট্রোল পাম্পের এল পি জি অটো ষ্টেশনে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাফ পেট্রোল সার্ভিস’ প্রতিষ্টানের মালিক মোহাম্মদ হোসেন এর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন চার ছেলেদের দিয়ে প্রতিষ্টানটি পরিচালনা করতেন।
পরে তাদের মা আম্বিয়া খাতুন দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেনকে ২০১৮ সালে আট বছরের জন্য কোন লিখিত রেজিষ্ট্রার্ড চুক্তি দেই নাই। ভূয়া টিপ দিয়ে জ্বাল দলিল বানিয়ে এতদিন ব্যবসা চালিয়েছেন। ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে ‘এলপি গ্যাস’ স্টেশন প্রতিষ্টা করেন দিদার আর ইকবাল। অথচ অন্য দুই ভাই রবিউল আর রেজাউল কিছুই জানেনা এবং ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করেন।
সরেজমিনে জানা যায়, নাফ পেট্রোল পাম্পের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ দিদার হোসেন গং দীর্ঘদিন ধরে তাহাদের পৈত্রিক ও মাতৃক সম্পত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নাফ পেট্রোল পাম্পের লাইসেন্স তাহার মা আম্বিয়া খাতুনের নামে করে তাদের নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছিল। কিন্তুু তাহার মা মৃত্যুর পরে তাহার চার সন্তান যৌথভাবে একই স্থানে ও সম্পদ থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে পরম সুখে ভোগ করে আসছিলেন।
কিন্তুু তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাইকে অভিহিত না করে তাদের সম্পত্তি বা ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করতে মোঃ দিদার হোসেন সহ অপর ভাই অবৈধভাবে এলপিজি অটো গ্যাস ষ্টেশন চালু করে ব্যবসা করে আসছিল। যা রবিউল হোসেন সহ অপর ভাইয়ের সম্পুন্ন অজানা বলে দাবি করেন।
নাফ পেট্রোল পাম্পের মালিক রবিউল হোসেন জানান, আমার মায়ের মৃত্যুর পরে আমাদের অজান্তে ভুয়া লাইসেন্স, ভুয়া ইজারাদার দলিল দেখিয়ে আমার বড় ভাই এলপিজি গ্যাস এককভাবে মালিকানা করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে যা আমরা জানি না। তবে আমাদের মায়ের দেওয়া বিধি অনুযায়ী আমরাও ওই এলপিজি গ্যাস ষ্টেশান টি হতে সমান ভাগ পাব। যেহেতু নাফ পেট্রোলপাম্পের লাইসেন্স আমার মায়ের নামে। কিন্তুু সে এখন আমাদের দুই ভাইকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করে। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ বিচার আশা করছি।
রবিউল আরো জানান, আমরা দুই ভাই সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর মোঃ রবিউল হোসেন, মোঃ রেজাউল হোসেন সহ বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করি। যাহা এম আর মামলা নং-৮১৯/২০২৩ ইং।
নাফ পেট্রোল পাম্পের মালিক রেজাউল হোসেন জানান, ৪ ভাইয়ের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকার পর ও ভূয়া দুই জনের নামে ট্রেড লাইসেন্স করে অবৈধভাবে এলপিইজি গ্যাস ষ্টেশন তৈরি করেছেন আমার দুই ভাই দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেন।
আমার ভাই দিদার রাত হলে মদপান করে। ঘরের পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলে। থাকার কোন পরিবেশ থাকে না। তাঁর একমাত্র পেশা মদপান করা।
অনাপত্তি সনদপত্র ছাড়া কোন এলপিজি গ্যাস স্টেশন হয় না। অনাপত্তিতে প্রচার আছে আম্বিয়া খাতুনের নামে এমনকি নাফ পেট্রোল পাম্পও আম্বিয়া খাতুন নামে চুড়ান্ত প্রচার আছে। যেহেতু আম্বিয়া খাতুনের নামে উক্ত লাইসেন্স হওয়ার কথা কিন্তু ঐ অনাপত্তি সনদপত্রে বলে মোহাম্মদ দিদার হোসেন, মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন এর নামে বাংলাদেশ বিস্ফোরক অধিদপ্তর হইতে কিভাবে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভাবে অবৈধ।
এ অবৈধ লাইসেন্স হওয়ার কারনে প্রতারক দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেন এর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রেজাউল হোসেন আরো জানান, আমরা দুই ভাই আইনে শরণাপন্ন হয়ে আমরা দুই ভাই মোঃ রবিউল হোসেন, মোঃ রেজাউল হোসেন কোর্টে বাদী হয়ে মামলা করেছি।যাহা এম আর মামলা নং-৮১৯/২০২৩ ইং।
জমির তপসীল: মৌজা:টেকনাফ,আর,এস,খতিয়ান নং-৫১০/১৪৬,আর,এস,দাগ নং-৫৬৬৭/৯১৯৪,বিএস,দাগ- ১১১৮,দিয়ারা খতিয়ান নং-২২৪২,দিয়ারা দাগ নং-৯৮২,জমির পরিমান-০.৩৪০০একর।
নাফ পেট্রোল পাম্পের মালিক দিদার হোসেন জানান, এল পিজি গ্যাস সম্পূর্ণ অনুমোদিত ও বৈধ এবং আমাদের দুই ভাইয়ের ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে করা একটি প্রতিষ্ঠান। তবে এর বিষয় নিয়ে আমার অপর দুই ভাই যে বৈরিতা আচরণ করছে তানি আমার যথেষ্ট ডকুমেন্টস পত্র রয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রফানুল হক চৌধুরী জানান, আদালতের নির্দেশে ‘নাফ পেট্রোল সার্ভিস’ এ নিয়ে বিবাদীদের সাথে বসে বিষয়টি নিয়ে আইনী ভাবে আলাপ হয়েছে। তারা তাদের কাগজ পত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই বাচাই শেষে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।
আরো জানান, অভিযান এসে গ্যাস পাম্প এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও কাগজপত্রের অসঙ্গতি দেখেছি যা পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমন কি ৪ ভাইয়ের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকার পর ও ভূয়া দুই জনের নামে ট্রেড লাইসেন্স করে অবৈধভাবে এলপিইজি গ্যাস ষ্টেশন তৈরি করেছেন। এটা অবৈধ। ডুকুমেন্টপত্র দেখাতে না পারলে এলপিইজি গ্যাস ষ্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হবে।