নিজস্ব প্রতিবেদক:
জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের তোতকখালী ছ’ভাইয়ের পাড়া এলাকায় দিবাগত রাতে স্থানীয় এক গর্ভবতী নারী সেলিনা আক্তার শেলী(৩০) সহ তার পরিবারের উপর হামলা চালায় একই ইউনিয়নের গোলার পাড়া এলাকার মনির আলম, শাহ আলমসহ তাদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টায় পি.এম.খালী ইউনিয়নের তোতকখালী ছ’ভাইয়ের পাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেলিনার বাবা নুরুল হুদার সাথে তার চাচা নুরুজ্জামানের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এর আগেও এই জমি বিরোধের জন্য কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতে একটি মামলাও করা হয়। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ পড়তে যাওয়ার পথিমধ্যে শোরগোল শুনে দেখা যায় সেলিনার নবনির্মানাধীন ঘরে হামলা চালায়। এই হামলার সময় সেলিনার স্বামী আবদুল গফুর নয়নের চালিত মাইক্রো কার (চট্টমেট্রো-গ ১২-২৫৬৮) ভেঙ্গে চুরমার করে।
হাসপাতাল ভর্তিকৃত গর্ভবতী মা সেলিনা আক্তার শেলী জানায়, আমার স্বামী আবদুল গফুর আর আমি খুব সাধারণ জীবনযাপন করি। স্বামী আবদুল গফুরের চালিত কারের উপাজনের মাধ্যমে আমাদের সংসার চলে। আমার চাচা নুরুজ্জামানের সাথে আমার বাবা নুরুল হুদার জমি সংক্রান্ত কথা কাটাকাটি হয়। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় আমার চাচার শ্যালক মনির আলমসহ একদল সন্ত্রাসী নিয়ে আমার নবনির্মানাধীন ঘর ভাংচুর করে। এতে বাধা দিলে আমি ও আমার পরিবারের উপর নৃশংস হামলা চালায়। এর কারণ জানতে চাইলে আমাকে তলপেটে লাথি মারে এবং মাঠিতে পড়ে যায়। এতে আমার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের উপরও হামলা চালায়। আমার নবনির্মানাধীন ঘর ভাংচুরের পর আমার স্বামী আবদুল গফুর নয়নের মাইক্রো কারটি ও শেষ পর্যন্ত রেহায় দিলনা। গাড়ির লাইসেন্স নং চট্টমেট্রো-গ ১২-২৫৬৮। আমি বর্তমানে পেটের প্রচন্ড ব্যাথার কারণে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।
এঘটনায় আমার চাচা নুরুজ্জামান ও তারর শ্যালক মনির আলম, চাচা নুরুল ইসলাম, নুরুল আজিম, চাচাতো বোন তানজিনা ও তার স্বামী মোঃ ইসহাক, সোনিয়া ও তার স্বামী মোঃ শাহ আলম ও তাদের নেতৃত্বে আসা এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা; যাদের রয়েছে অসংখ্য মার্ডার, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মামলা। তাদের জন্য পুরো পি.এম.খালীবাসী নিরাপদ মনে করে না।
অত্র ঘটনার আইনি ইনভেসটিগেটর এসআই মখলেছুর রহমান জানান, আমি ঘটনার পরের দিন পিএমখালীর তোতকখালী এলাকায় গিয়ে দেখলাম সেলিনা আক্তার শেলীর বাবা নুরুল হুদার সাথে দীর্ঘদিনের জমিজমার বিরোধ ছিল। এর আগেও তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া বিবাদ হয়েছিল এবং এবিষয়ে মামলা ও হয়েছিল। পরবর্তীতে দুইপক্ষকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের পর আইনি সহায়তা গ্রহণের কথা জানালাম।
উক্ত ঘটনায় সেলিনার স্বামী আবদুল গফুরের বক্তব্যে তিনি জানান, আমার স্ত্রীর পরিবারের সাথে জমিজমা নিয়ে ঝগড়া থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে আমার সাথে কোন বিবাদ ছিল না। যে সন্ত্রাসীরা হামলা করতে আসছিল আমি তাদের দেখে নীরবতা পালন করি। তারপরেও তারা আমার গর্ভবতী স্ত্রী সেলিনাকে পেটে প্রচন্ড আঘাত করে। পরবর্তীতে আমার গাড়িকে ও তারা রেহায় দিল না। আমার চালিত মাইক্রো কারটি তারা ভাংচুর করে। এই ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রইল তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।