
মিজানুর রহমান, কক্সবাজার :
কক্সবাজারের পার্শ্ববর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি। এই উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন ঘুমধুম। উখিয়ার টিভি টাওয়ার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার গেলে চোখে পড়বে রেডিয়েন্ট গার্ডেন।
যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সম্মিলনে হারিয়ে যেতে চাইবে নিজের অজান্তেই। প্রকৃতি এখানে নিজেই যেন সবকিছু সাজিয়েছে। যার অপরূপ সৌন্দর্য্য প্রতিনিয়ত কাছে টানছে পর্যটকদের।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৭৫ একর জমিতে এখানে গড়ে উঠেছে সবুজের মহাসমারোহ। যার মধ্যে ৫০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত নানান প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ওষুধী গাছ। বছরজুড়ে এখানে মিলবে আম, কাঠাল, আনারস, ড্রাগন, আতা, পেয়ারা, চায়না কমলা, শরীফা, বেল, কাঠবাদামসহ প্রায় ৫০ প্রজাতির সুস্বাদু ফল। প্রতি বছর এখান থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করা হয়। তবে খরচের তুলনায় এই আয় নগণ্য।
এছাড়া বাগানজুড়ে সৌরভ ছড়াচ্ছে গোলাপ, জবা, গন্ধরাজ, বকুল, শিউলি, গাম্বিয়া, কামিনী, নারগিস ফার্ম, কৃষ্ণচূড়া, লিটল স্টারসহ ২০ প্রজাতির চোখ জুড়ানো ফুল।
বাকি ২৫ একরে গড়ে তোলা হয়েছে সুবিশাল রাবার বাগান। কার্বন শোষণ ও মাটির ক্ষয়রোধের পাশাপাশি এই রাবার বাগান অর্থনীতি এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাগানের অন্যপ্রান্তে পাহাড়ি টিলার ঢালুতে নজর কাড়বে একটি দৃষ্টিনন্দর পুকুর। যেখানে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করা হয়। গরু—ছাগলের জন্যও আছে বিশাল খামার। যা অতি যত্নে লালন করা হয়। এছাড়া এক পলক দৃষ্টি যাবে কবুতরের ঝাঁকে। তাদের বাকবাকুম শব্দে মুখরিত পুরো বাগান।
পর্যটকদের পাশাপাশি এখানে বিকাল হলেই ভিড় বাড়ে স্থানীয়দেরও। স্থানীয় সংবাদকর্মী নুর মোহাম্মদ সিকদার জানালেন, এখানে আগে গভীর জঙ্গল ছিল। চলাফেরায় আমরা ভয় পেতাম। কিন্তু রেডিয়েন্ট গার্ডেন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বদলে গেছে এখানকার চেহারা। বন শিল্পের সাথে দারুণ পর্যটনস্পট গড়ে উঠেছে। যা অবলোকনে প্রতিনিয়ত মানুষ ছুটে আসে এখানে।
এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা জানালেন, শহর জীবনে কংক্রিটের রাজত্বে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে মানুষ। আমরা বিদেশে যায় প্রকৃতির সৌন্দর্য্য দেখার জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে বিদেশের চেয়ে অসংখ্য সুন্দর জায়গা রয়েছে। যার মধ্যে এই রেডিয়েন্ট গার্ডেন। বিদেশী নানান জাতের ফল দেশের মাটিতে ফলন হচ্ছে। যার স্বাদও অতুলনীয়। তাই এই জায়গাকে পরিচর্যা করা প্রয়োজন।
রেডিয়েন্ট বিজনেস কনসোর্টিয়াম লিঃ কক্সবাজারের প্রজেক্ট কো—অর্ডিনেটর মাসুর উর আলম লিটন বলেন, ১৯৮৫ সালে এটি গড়ে তোলেন রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। বাগানের সাথে তিনি পর্যটনকে প্রমোট করার উপর গুরুত্ব দেন। শুধু বাগান নয়, চেয়ারম্যানের উদ্যোগে নানা সেবামূলক কার্যক্রমেও সম্পৃক্ত রেডিয়েন্ট। আগামীতে এখানে ন্যাচারাল পার্ক ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেখানে স্থানীয় বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..