মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রামু প্রেস ক্লাবের কমিটি গঠিত: সভাপতি কাশেম, সাধারণ সম্পাদক ফরমান পিএমখালীতে ওএমএসের চাল পাচারের সময় ডিলারসহ ২১ বস্তা চাল জব্দ। বিশ্ব মুসলমানদের ঐক্যের আহ্বান নেজামে ইসলাম পার্টির ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা ও ভারতে বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল পাসের প্রতিবাদে রামুতে ওলামা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল প্যানোয়া নিউজের প্রধান প্রতিবেদকের দায়িত্ব পেলেন সরওয়ার সাকিব মাদকাসক্ত ভাসুরের ছুরিকাঘাতে গৃহবধু খুন! চকরিয়ার খুটাখালী কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন-সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার সাংবাদিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন-এর উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত মীরসরাইয়ে বিএনপি’র দুই পক্ষের সংঘর্ষে পথচারী নিহত

কক্সবাজার পৌরসভায় তিন কর্মকর্তা কর্তৃক কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ: সত্যতা পেয়ে ফাইলপত্র জব্দ করেছে দুদক।

রিয়াজ উদ্দিন
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৬০ বার পঠিত

রিয়াজ উদ্দিন:

কক্সবাজার পৌরসভায় বিভিন্ন অনিয়ম বিশেষ করে রোহিঙ্গা ভোটার, সড়কের লাইট বন্ধ, সিসিটিভি অকার্যকরসহ দায়িত্বরত কয়েকজন কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান সহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়।এতে পৌরসভার তিন কর্মকর্তা মিলেমিশে কোটি কোটি টাকা অনিয়ম—দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া বাবু নেতৃত্বে দুদকের একটি টিম কক্সবাজার পৌরসভা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে গণমাধ্যমে এমন তথ্য জানান।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার পৌরসভার তিন কর্মকর্তা পৌর নির্বাহী রাসেল চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী পরাক্রম চাকমা, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিলো কক্সবাজার পৌরসভা।

কর্মচারীদের অভিযোগ,এই তিন কর্মকর্তা সিন্ডিকেট করে ভূয়া প্রকল্প বিল ভাউচার, মাস্টাররোল বানিয়ে প্রকল্প তৈরি, মাস্টাররোলে কর্মচারী দেখানোসহ ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন বানিজ্য দৈনিক রাজস্ব আয় থেকে টাকা গায়েবসহ অধিনস্ত কর্মকর্তা—কর্মচারিদের চাকরি খাওয়ার হুমকি দিয়ে দৌড়ের উপর রাখাসহ প্রতিষ্ঠানতে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ ও ছিলো রীতিমতো।

শুধু তা—ই নয়, সাবেক মেয়রদের ভুয়া বিল পাস করে, বেনামি মাস্টাররোলে কর্মচারি নিয়োগ করে, পেছনের তারিখ দিয়ে সাবেক মেয়রের চেক স্বাক্ষর করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এরা। তাদের লাগামহীন এই অনিয়ম—দুর্নীতির দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছিলো ভুক্তভোগীদের।

পরে এই নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে সর্বশেষ আজ কক্সবাজার পৌরসভায় অভিযান চালায় দুদকের একটি টিম।

দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানের শুরুতেই মেয়রের কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়। পরে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাব রক্ষকের রুম থেকেও কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়।

সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া বলেন, সিন্ডিকেট করে ভুয়া প্রকল্প, বিল ভাউচার, মাস্টাররোল বানিয়ে প্রকল্প তৈরি ও মাস্টাররোলে কর্মচারী দেখানোসহ ঠিকাদারদের কাছে থেকে কমিশন বাণিজ্য, দৈনিক রাজস্ব আয় থেকে টাকা গায়েবের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অধীনস্ত কর্মচারীদের জিম্মি করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। সাবেক মেয়রদের ভুয়া বিল পাস করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

এই সিন্ডিকেটটি সর্বত্র ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ভুয়া প্রকল্প বানিয়ে তারা কোটি কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিলো। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি এই কর্মকর্তাদের মর্জি মতেই চলছিলো। শুধু তা—ই নয় দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত এই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত সরকারের আমলে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভা থেকে অবসরে যাওয়ার পরও প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তা রনজিত দে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পাননি। তিনি জানান, জীবন—যৌবন শেষ করেছি এই পৌরসভায় চাকরি করে। আমাদের কোন পেনশন নেই চাকরির বেতন থেকে কেটে রাখা টাকা এবং পৌরসভা থেকে দেওয়া একটি অংশের টাকার জন্য তিন বছর ধরে ঘুরছি। আসতে আসতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। এখন আর যেতে ইচ্ছে করেনা। মূলত পৌরসভায় তিন জনের সিন্ডিকেট সব কিছু লুটপাট করছে। ফলে অন্যান্য কর্মকর্তা—কর্মচারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারি সমিতির নেতারা বলেন, ‘এখনো কর্মকর্তা—কর্মচারিদের বেতন হয়নি। অথচ একসপ্তাহ আগে ঠিকাদারের ৪ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কারন ঠিকাদারের বিল দিলে তিন জনের সিন্ডিকেটে কমিশন বানিজ্য থাকে ইতিমধ্যে পৌরসভায় সমস্ত কর্মকর্তা—কর্মচারি মিলে আন্দোলনের যাওয়ার একটা পরিকল্পনা করেছে। আর সহ্য হচ্ছে না তাদের অত্যাচার। ৮ বছর ধয়ে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটি ফান্ডের কোন টাকা আমাদের একাউন্টে জমা হয়নি।’

ঠিকানার নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম মূলত সাবেক মেয়রদের ক্ষমতাকে পূজি করে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল তারই অংশ হিসাবে বর্তমানে ৬ মাস বা ১ বছর এমনকি ২ বছর আগে করা কাজের বিল দিচ্ছে তাও পুরাতন মেয়রের স্বাক্ষরে। পুরাতন কাজগুলোর কোন হদিস না থাকলেও তাঁরা কাগজ কলমে ঠিক করে বিল তুলে নিজের কমিশনসহ বেশির ভাগ টাকা আহসাৎ করছে।

এ ব্যাপরে পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘পৌরসভার অবস্থা খুবই নাজুক। প্রতিষ্ঠানটির রন্দ্রে বস্ত্রে দুর্নীতি—অনয়িম। এমনকি দৈনিক বিভিন্ন ফরম, সনদ, লাইসেন্স এ থেকে আয় হওয়া টাকা পৌরসভার একাউন্টে জমা না কয়ে তিন কর্মকর্তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। সচিব রাসেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগসহ থাকায় পরও কিভাবে তিনি বহাল তবিয়তে থাকেন সেটাই প্রশ্ন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs