বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জালালাবাদে ঘটক শুক্কুরের জমি জবর দখল চেষ্টার অভিযোগে -রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা  চকরিয়ায় বনের হরিণ শিকার করে জবাই!নিরব সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ রামু প্রেস ক্লাবের কমিটি গঠিত: সভাপতি কাশেম, সাধারণ সম্পাদক ফরমান পিএমখালীতে ওএমএসের চাল পাচারের সময় ডিলারসহ ২১ বস্তা চাল জব্দ। বিশ্ব মুসলমানদের ঐক্যের আহ্বান নেজামে ইসলাম পার্টির ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা ও ভারতে বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল পাসের প্রতিবাদে রামুতে ওলামা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল প্যানোয়া নিউজের প্রধান প্রতিবেদকের দায়িত্ব পেলেন সরওয়ার সাকিব মাদকাসক্ত ভাসুরের ছুরিকাঘাতে গৃহবধু খুন! চকরিয়ার খুটাখালী কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন-সালাহউদ্দিন আহমেদ

এ বছর নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ইলিশ মাছের পেটে ডিম কম : উপদেষ্টা 

নুরুল হোসাইন
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭১ বার পঠিত

নুরুল হোসাইন:

দুই দিনব্যাপী পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’ আয়োজন আগারগাও মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘর সম্মেলন কক্ষে সকাল ১০ টায় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ২০২৪ ইং সকাল ১০ ঘটিকার সময় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরার) সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব শরীফ জামিল। আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ধরার উপদেষ্টা ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ঘোষণা ও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

সম্মানিত অতিথি ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারিদা আখতার। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন- ফিলিপাইনের এপিএমডিডির সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল। সঞ্চালনায় ছিলেন- আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব শরীফ জামিল।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন,বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মিস শারমিন মুরশিদ এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি) ও আহ্বায়ক, এশিয়ান এনার্জি নেটওয়ার্ক (এইএন)সমন্বয়কারী মিস লিডি ন্যাকপিল,কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন,কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন ও টেকনাফ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল হোসাইন সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারিদা আখতার বলেন, জলবায়ুর প্রভাব শুধু পরিবেশে নয়, খাদ্যচক্র ও জীবন-জীবিকাসহ সর্বক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে এ বছর নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ইলিশ মাছের পেটে ডিম কম হয়েছে। এতে ইলিশের উৎপাদন কমেছে।

এ বছর সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ইলিশের পেটে ডিম হয়নি। এতে উৎপাদন কমে গেছে। ইলিশ সাগর থেকে নদীতে আসার পথে ও নদী থেকে সাগরে যাওয়ার যাতায়াতে বাধার মুখে পড়েছে। নদী দখল হয়ে গেছে। এসব প্রভাব ফেলছে উৎপাদনে।

তিনি হাওরাঞ্চলে ১২ মাসী সড়ক নির্মাণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইটনা মিঠামইনে অঞ্চলে ১২ মাসী সড়ক তৈরির কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সেখানকার মাছের যাতায়াত বন্ধ হয়ে উৎপাদন কমে গেছে। এই সড়কে হাওরের পানি সঠিকভাবে বের করে দিতে না পারলে সেখানকার মাছ ও জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব শুরু হয়েছে।

পরিবেশের ক্ষতি নিরুপণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, আমাদের গ্রাম ও মাঠ পর্যায়ের লোকদের কথা শুনে কাজ করলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারটা কতটা গভীরে গিয়ে আঘাত হানতে পারে তার উদাহারণ হচ্ছে খাদ্য সরবরাহে প্রভাব ফেলা। এই জলবায়ুর ন্যায্যতা এককভাবে শুধু পরিবেশ নয় বরং জীবন-জীবিকার সঙ্গে জড়িত।

শারমীন এস মুরশিদ বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক-সামাজিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে যে সভ্যতা দাঁড়িয়ে আছে সেই অর্থনৈতিক-সামাজিক ভীতির ভেতরের দ্বন্দ্বের কারণেই বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর আবির্ভাব দেখতে পাচ্ছি। যে শক্তিকে ধরে এ সভ্যতার ও আধুনিকতার উন্মেষ ঘটেছে সেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি জড়িত। তার উপর একটি ধারা বা প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। এটি সারা বিশ্বকে গভীরভাবে নাড়া দিচ্ছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত আস্মিকভাবে কঠিন সংগ্রাম ও অভুত্থানের ফলে গঠিত হয়েছে। যেই সংগ্রাম ও অভুত্থান ঘটিয়েছে আমাদের বাচ্চারা। আমরা ঘটাইনি, রাজনীতিবিদরা ঘটায়নি। সেখানে আমাদের প্রজন্ম (প্রবীণরা) বাংলাদেশে, উপমহাদেশে ও সারা বিশ্বে অত্যন্ত দায়িত্বহীন ভূমিকা পালন করছে।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশের ভেতরে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের মধ্য দিয়ে একটি বিপ্লব ঘটে গেছে সেটার তাৎপর্যটা কী সেটা প্রশ্ন করে সভ্যতার আর্থ-সামাজিক কাঠামোকে। অর্থাৎ আমি আমার দেশে যে কাঠামো তৈরি করেছি সেটাকে প্রশ্ন করে। সেই কাঠামোকে বাঁচিয়ে রাখতে পুজিবাদী সমাজ তৈরি করা হয়। সেই কাঠামোর তথাকথিত দর্শন হচ্ছে পুঁজিভিত্তিক গণতন্ত্র। যা আমরা গণতন্ত্র, রাজনীতির নামে গত ৫০-৬০ বছর ধরে টিকিয়ে রেখেছি।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন হলেও কেন জলবায়ু ইস্যুতে পরিবর্তন আসছে না তার কারণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাপী এসব রাজনীতি ও অর্থনৈতিক কাঠামোর কারণে কপ সম্মেলন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা জলবায়ুকে ইস্যুকে সমাধান করতে পারছি না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারছি এর মূল কারণ হচ্ছে এটা পুঁজির উপর নির্ভরশীল। তাই একের পর এক কপ সম্মেলন হচ্ছে কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এসব কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

দেশে রাজনীতির নামে অপরাজনীতি ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই অপরাজনীতি বাচ্চারা ভেঙেছে। বিগত সরকার পরিবেশকে ধ্বংক করে প্রকল্প দিয়েছে। নদী দখল করে অবকাঠামো তৈরি করেছে। আমরা তার অনেক কিছু বাতিল করে দিয়েছে। এ সরকার চায় নীল ও সবুজ বাংলাদেশ। নদী রক্ষায় আইন হলে সেটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

নিজের কাজের সমালোচনা সম্পর্কে বলেন, আমরা এখন থেকে এমন কাজ করব যাতে চলে গেলে কেউ ধিক্কার না দিয়ে সুনাম করে।

ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, আমরা ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধশালী দেশ কিন্তু ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিবেশ ক্ষতির কারণে আমরা ভুক্তভোগী। এতে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। তাদের কারণে অতি বৃষ্টি হচ্ছে। আবার বন্যাও হচ্ছে। এজন্য তারা দায়ী। আমরা এসব থেকে উত্তোরণ চাই।

 

লিডি ন্যাকপিল বলেন, জাতিসংঘের বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন তথা কনফারেন্স অব দ্যা পার্টিজ (কপ) সম্মেলনে মূলত সরকারই পার্টি। তারাই দাবি আদায়ে দেন-দরবার করে, সেখানে জনগণকে সচেতন করতে আমাদের কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণে চীন ও ভারত এগিয়ে থাকলেও ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলো দায়ী। সেজন্য আমাদের ক্ষতিপূরণ চাওয়া ও আদায়ের ক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করা দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
১০

এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs