প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১২, ২০২৫, ৩:২০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ৯:১২ পি.এম
ফয়সাল আমিনের সহায়তায় এতিম ৩ সন্তানসহ বিধবা ঝিনুক আকতারের স্বপ্ন পূরণ

এম.এ.কে.রানা,মহেশখালী:
অবশেষে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে আগুনে পুড়ে যাওয়া অসহায় এতিম ৩ কন্যা সন্তানসহ বিধবা ঝিনুক আকতার।
গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম তিতা মাঝির পাড়া এলাকার মরহুম জানে আলমের স্ত্রী বিধবা ঝিনুক আকতারের ছোট্ট ঘরটি মুহূর্তের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে এবং নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যায়। বসতঘরের মধ্যে থাকা তার বোনের জমানো নগদ ১ লক্ষ টাকাসহ সব মালামাল ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের আগুন নিভানো গেলেও মূল্যবান আসবাবপত্রসহ কিছুই রক্ষা করতে পারেনি।
তিন বছর আগে প্রতিবেশী এক চাচার দেওয়া ছোট্ট একটি ঘরে কোনোভাবে মাথা গোঁজার সুযোগ পেয়েছিলেন বিধবা ঝিনুকা আকতার। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সেই ঘরটিও ছাই করে দিয়েছে। ফলে তিনি ও তার তিন কন্যা সন্তান খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছিলেন।
৮ নভেম্বর দৈনিক রূপালী সৈকত পত্রিকায় “মাতারবাড়ীতে আগুনে পুড়ে ছাই এক বিধবা নারীর স্বপ্ন” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি মহেশখালী পৌরসভা চরপাড়া এলাকার কৃতি সন্তান প্রবাসী ফয়সাল আমিনের নজরে আসলে তিনি ৯ নভেম্বর সকালে এতিম ৩ সন্তানসহ ঝিনুক আকতারের খোঁজ-খবর নিতে ছোটে এসেছিলেন।এবং তার নিজস্ব অর্থায়নে তাকে একটি নতুন ঘর করে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দেন। যাতে তিনি তার এতিম ৩ কন্যা সন্তানকে নিয়ে নিরাপদে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন।
এদিকে গতকাল শনিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঝিনুক আকতারের ঘর নির্মাণে প্রবাসী ফয়সাল আমিন তার ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন— মাতারবাড়ির অসহায় বিধবা ঝিনুক আকতারের জন্য একটি নতুন ঘর নির্মাণের কাজ আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে ঝিনুকের বাড়িতে গিয়ে তার করুণ অবস্থা দেখে মনের গভীরে নাড়া দিয়েছিল। ঝিনুক আকতারের ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, শরীরে কাপড় ছাড়া কিছু নেই—একজন মা হিসেবে, স্বামীহীন এবং তিনটি ছোট সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে তার এ অসহায়ত্ব দেখলে হৃদয়টা ভেঙে যায়।
আমি তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে তার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করব। আজ আল্লাহর রহমতে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। তবে এই ঘরটি শুধুই একটি আশ্রয়স্থল নয়, এটি হবে ঝিনুক আকতারের জীবনে নতুন আশার আলোকবর্তিকা, আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারের জায়গা এবং তার সন্তানদের জন্য ভবিষ্যতের একটি নিরাপদ ঘাঁটি।
যে ঘরটি নির্মিত হতে যাচ্ছে, তা যেন কেবল একটি আশ্রয়ের স্থান নয়, বরং সুখ, সুরক্ষা এবং তাদের জীবন-সংগ্রামের নতুন সূচনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমি আশা করি, ঝিনুক আকতার এবং তার সন্তানেরা এই ঘরে থেকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে পারবে, যেখানে তাদের জীবনের প্রতিটি দিন হবে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক।
ঝিনুক আকতারের ঘর নির্মাণের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ফয়সাল আমিনের এ মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করেন এলাকাবাসী। তারা অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রবাসী ফয়সাল আমিনের সহায়তায় মাথা গোজার ঠাঁই পেয়ে ঝিনুক আকতার অনুভূতি প্রকাশ করে জানান, আমি খুব গরীব, দুই বছর আগে আমার স্বামী মারা যায়। সেই থেকে কষ্টে দিন কাটছে আমার ও তিন কন্যা সন্তানের।আগুনে আমার ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।নতুন ঘর করার সামর্থ্য ছিল না আমার।প্রবাসী ফয়সাল আমিনের সহায়তায় এখন একটি নতুন ঘর পেতে যাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ। প্রবাসী ভাইটির জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতের মধ্যে সুন্দর একটি ঘর দান করেন।
Copyright © 2025 Dainik Rupali Saikat. All rights reserved.