রিয়াজ উদ্দিন:
আজ ভয়াল ২৫শে মার্চ, বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসের কালোরাত, জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ এই দিনে নিরীহ বাঙ্গালীর উপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চালানো বর্বর গণহত্যার ভয়াবহ স্মৃতিচারণে ও শহীদদের স্মরণে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়েছে ।
সোমবার( ২৫শে মার্চ) সকাল ১১.০০টায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সূর্যসারথি , কক্সবাজার জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি , পরিবেশ বাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ও কক্সবাজারের জনবহুল পত্রিকা দৈনিক রূপালী সৈকতের প্রকাশক ও সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ নুরুল আলম, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির ভুঁইয়া, ফিজিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সোহেল বক্স, প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রূপস পাল, এনাটমি বিভাগের সহাকারি অধ্যাপক ডাঃ যুবায়ের আহমেদ, বায়োকেমিষ্ট্রি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ খালেদ মোশাররফ হোসেন, ফরেনসিকমেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী, নবগঠিত কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবসার চৌধুরী সানিয়াত ও সাধারণ সম্পাদক তাজমির রহমানসহ কলেজের অধ্যাপক ও প্রভাষকবৃন্দসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, আমরা জয়লাভ করি। বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস চর্চায় উৎসাহিত করতে হবে।
প্রধান অতিথি বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাহার সাথে ঘটে যাওয়া স্মৃতি সকলের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে বাঙালিদের কোনো রাষ্ট্র ছিল না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র দিয়েছেন। এখন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। এর মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যার নৃশংসতা ছিলো ভয়াবহ। অচিরেই আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এ দিবস স্বীকৃতি লাভ করবে এবং গণহত্যার বিচার করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করি।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন ফিজিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সোহেল বক্স, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রূপস পাল, নবগঠিত কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবসার চৌধুরী সানিয়াত ও সাধারণ সম্পাদক তাজমির রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ ডঃ ফরহাদ হোসেন বলেন, জাতীয় গণহত্যা দিবস' বা বাঙালি গণহত্যা স্মরণ দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি দিবস। পাকিস্তানি ঘাতকরা কেবল বাংলাদেশের নিরীহ সাধারণ মানুষদেরই হত্যা করেনি, তারা একাত্তরের পুরো মুক্তিযুদ্ধকালে আমাদের দেশের জ্ঞানী—গুণী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। মহান বুদ্ধিজীবীরা বেঁচে থাকলে আমাদের পথ দেখাতে পারতেন। মহান বুদ্ধিজীবীদের হারানোর ফলে জ্ঞানের শূন্যতা আজও পূরণ হয়নি। তবে সেই শূন্যতা হতে জাতিকে বের করে আনতে হবে।
অনুষ্ঠান শেষে সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্ত ঘটে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রূপস পাল।