বিশেষ প্রতিবেদক :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কানজর পাড়ায় নাফনদী ও বড় ফিশারীর মধ্যবর্তি জায়গায় ইয়াবার বিশাল একটি চালান লুট হওয়ার ঘটনায় এলাকায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এই লুন্ঠিত ইয়াবা নিয়ে গত কয়েকদিনধরে একের পর এক জাতীয় পত্রিকা ও স্থানীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পর্বাকারে নিউজ হয়েছে ।এরপরেও ইয়াবা লুটকারী নেপথ্যের নায়কেরা অধরা থাকায় সচেতন মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতো বড় ইয়াবার চালান লুট করার পরেও লুটকারি ও ইয়াবার মালিকেরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায়,তাহলে এসব দেখে ভবিষ্যৎত প্রজন্মরাও মাদকের কারবার ও লুটপাটে জড়িয়ে পড়বে বলেও মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা। উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘটনার সাথে জড়িতরা নানা তদবিরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়,কেড়ে নেওয়া ইয়াবা ১লক্ষ পিস ইয়াবা ছিল,যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন জনের হাতে চলে গেছে। এদিকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী,গোয়েন্দা সংস্থাসহ অনেকে তা নিয়ে মাঠে কাজ করছে। স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে গত ১৬ জুন দিবাগত গভীর রাতে
মনজুর প্রকাশ বার্মাইয়া লাল বুইজ্জা,তার জামাই মোঃ হোছন,সেলিম প্রকাশ বার্মাইয়া সেলিম দীর্ঘদিন ধরে কান্জরপাড়ার একটি মাদক সিন্ডিকেটের আশ্রয়ে ছিল। ১৬ই জুন ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ২ টায় নাফনদীর নিকটে বিশাল একটি চালান খালাস করে। পরে তা নিয়ে তাদের গন্তব্যে নেয়ার সময় কানজরপাড়ার পূর্বে বড় ফিশারী নামক চিংড়ি ঘেরের নিকটে ১ লাখ ইয়াবা লুট করে কানজর পাড়ার একটি চিহ্নিত ইয়াবা চক্র।সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লোকেরাও অনেক তথ্য খুজে পেয়েছে। তাদের তথ্য মতে ইয়াবা ছিনতাই বা লুটপাটের নেতৃত্ব দেয় হোয়াইক্যং ৫ নং ওয়ার্ডের ৩ সহোদর যথাক্রমে জিয়াবুল হক, মোঃ আমিন, জালাল । লুট হওয়া উক্ত ইয়াবার বস্তা থেকে প্রশাসন কে ম্যানেজ করার কথা বলে শেখ কবির নামক এক চৌকিদার ১০ হাজার ইয়াবা( এক কার্ট) নেয় বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে উক্ত চৌকিদারের সাথে মুঠোফোনে যাচাই করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন। তবে তার কাছে আশ্রয় নেয়া এক যুবক সরকারি দলের পরিচয়ে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সোস্যাল মিডিয়ায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা গুরুতর চেষ্টা চালাচ্ছে । যা নিয়ে প্রতিবেদক উর্ধতন নেতৃবৃন্দ কে বিষয়টি অবহিতও করেন। এদিকে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা যায়, ইয়াবা লুটের নেপথ্যে একজন সিএনজি চালক সহ আরও ৭জন জড়িত রয়েছে। লুটকৃত ইয়াবার ভাগও নেয় তারা। ছিনতাইকারী ও ইয়াবা জমাকারীর বাড়ি কানজর পাড়া আদর্শ মডেল একাডেমি কে জি স্কুলের একটু পশ্চিম পাশে স্থানীয় মেম্বার এর বাড়ির উত্তর পাশে পুকুরের পশ্চিম পাড়ে। হোয়াইক্যং ইউপির বর্তমান মেম্বার আব্দুল গফ্ফার এসব ইয়াবা লুটপাটের মূল নায়ক হিসেবে কাজ করছে বলেও জানা যায়। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও ইয়াবা ব্যবসা করেছে বলে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।মেম্বার আব্দুল গফ্ফারের পূর্বের ইয়াবার মামলা নাম্বার ৩২/৯৫। এসব বিষয়ে মেম্বারকে রীমিমতো সহযোগিতা করে যাচ্ছে তার ভাই মোহাম্মদ শরীফ।শরীফ লুটকরা ইয়াবাগুলো অল্প দামে কিনতে নিচ্ছে বলেও কয়েকজন লোক প্রতিবেদককে জানায়।
এদিকে বিষয়টি টের পেয়ে স্থানিয় বিজিবি, পুলিশ সহ চিংড়ি ঘেরের বিভিন্ন লোকজন ও শুনেছেন বলে স্বীকার করেছেন। স্থানিয় সচেতন মহলের মতে এত বড় ইয়াবার চালান লুটের পর এখনও অপরাধীরা ধরা না পাড়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের উকি দিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আলোচিত এত বড় ইয়াবার চালান লুটের ঘটনা কি ধামাচাপা পড়বে? এমন প্রশ্নও সচেতন মহলের।
উল্লেখ্য যে, ইয়াবা পাচার রোধে স্থানীয় জেলেরা দীর্ঘদিন ধরে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলেও থেমে নেই ইয়াবা পাচার। ইয়াবার কারণে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে জেলেদের মাঝে ক্ষোভ,হতাশা ও উত্তেজনার যেন শেষ নেই। বর্তমানে অসহায় ও কর্মহীন হয়ে পড়েছে জেলে পরিবার গুলো।
কান্জর পাড়া ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফ্ফার জানান,লুটপাটের ঘটনা সত্য। তবে তা বর্মাইয়্যা বর্মাইয়্যা ঘটনা। পুরাতন ও নতুন বর্মাইয়্যা মিলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, এতে আমার এলাকার কেউ জড়িত নেই।
উক্ত ইয়াবা লুটপাটের বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি অপারেশন মোঃ খুরশেদ আলম প্রতিবেদক কে জানান,বিষয়টি শুনে তাদের বাড়িঘর তল্লাশী করেছি। ইয়াবা ও পাইনি,বাড়ির কাউকে খুজে পাইনি। তা নিয়ে আরো খতিয়ে দেখছি।জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন,তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পুলিশকে সহযোগিতা করতে।
উল্লেখযে,এর আগেও খারাংখালী, রঙ্গিখালী,হ্নীলা,হোয়াইক্যং খারাইঙ্গাঘোনা,সাবরাং সহ বিভিন্ন এলাকায় এই ধরণের ইয়াবা লুটের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত লুন্ঠিত ইয়াবা উদ্ধার ও লুটকারি এবং মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি।