মিজানুর রহমান
বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে দিন দিন হাজার হাজার শিশুশ্রমিকের উৎপাত হচ্ছে। গেল কয়েক বছর ধরে দেখা যায় প্রতিদিন শিশু গুলো স্কুলে না গিয়ে সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ছে।ফলে জেলার শিক্ষার হার যেন শুন্যে পরিনত হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কিছু শিশু পানি বিক্রি করছে, কিছু শিশু পর্যটকদের মাথা থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত টিপে দিচ্ছে মাত্র ২০-৪০ টাকার জন্য।আর কিছু শিশু ঘোড়া দিয়ে পর্যটকদের ঘোরাচ্ছে। কিছু শিশু ঝিনুক বিক্রি করছে,কিছু আমড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করছে। আবার কিছু শিশু ছাতা গুলো দেখাশোনা করছে। কিছু শিশু ফুল বিক্রি করছে, কিছু শিশু দোকান করছে। কিছু শিশু ক্যামরা দিয়ে পর্যটকদের ছবি তুলাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়তেছে। এখানে ছেলে মেয়ে উভয়কেও দেখা গেছে। এমন কি এসব শিশু দিন দিন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়তেছে বলেও জানা যায়। আবার কিছু শিশু দিয়ে অনেকে মরন নেশা ইয়াবা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাদক নেওয়া আশা করেও বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। জানাযায়, এসব শিশুদেরকে বেশিরভাগ কাজে লাগিয়ে ব্যাবহার করে একটা সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী, তারা শিশু গুলোকে কাজে লাগিয়ে দিন দিন কোটি টাকার মালিক হচ্ছে বলেও জানাযায়। আবার অনেকে তাদেরকে চোখে চোখে রাখে যাতে টাকা পয়সা এলো মেলো না হয়। দিন দিন যদি এভাবেই শিশুশ্রম বাড়তেই থাকে তাহলে জেলার শিক্ষার হার শুন্য হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল। আর এ শিশু শ্রমিকের অর্ধেকেরই বয়স ৫ থেকে ১১ বছর। এদের বেশির ভাগই ছেলে। করোনাভাইরাস মহামারি ও লকডাউনের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট গত এক বছরে আরও শতশত শিশুকে ঠেলে দিয়েছে একই দুর্ভাগ্যের দিকে। মহামারিকাল শিশুদের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে আগামী কয়েক বছরে প্রায় লক্ষরেও বেশি শিশু শ্রমিক হতে পারে বলে আশঙ্কা সচেতন মহলের। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন থেকে জানাযায়, বিশ্বজুড়ে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ২০২০ সালের ১৬ কোটি অতিক্রম করেছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চার বছরে এ তালিকায় যোগ হয়েছে ৮৪ লাখ নতুন নাম, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। আগামী দুই বছরে আরও ৫ কোটি শিশুশ্রমিক বাড়তে পারে। জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ‘চাইল্ড লেবার: গ্লোবাল এস্টিমেটস ২০২০, ট্রেন্ডস অ্যান্ড দ্য রোড ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি যৌথভাবে প্রকাশ করে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছি। এমন কি জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমরা এই শিশু গুলোর তালিকা করতেছি। এবং এই তালিকা গুলো হওয়ার পর তাদেরকে একটা পুনর্বাসন করার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।