শাহাদাত হোছাইন, পেকুয়া।
পেকুয়ায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য টইটং হাজ্বিবাজার- ঢালারমুখ সড়ক। বর্তমানে সড়কটি বীর মুক্তিযোদ্ধা রমিজ আহমদ সড়ক নামে নামকরন হয়েছে। কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের ঢালারমুখ, হারকিলাধারা, রমিজ পাড়া, মাঝের পাড়া, দরগাহমোড়া,সোনাইছড়ি রমিজপাড়াসহ এই পাঁচটি গ্রামের মানুষের যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম গ্রামীন এ সড়কটি। পাঁচটি গ্রামে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বসবাস। বৈশিষ্ট্যগতভাবে এসব গ্রাম পাহাড় বেষ্টিত। গত তিনদিন আগে দুইদিনের টানা বর্ষন ও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি একাকার হয়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে শত শত বাড়িঘর। সড়কটি বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সড়কের মাঝেরপাড়া এলাকার সাবেক মছু মেম্বারের বাড়ি পয়েন্টে প্রায় দু’শ মিটার বিলীন হয়েছে। মুল সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে যাতায়তে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পাঁচ গ্রামের মানুষ। কয়েকদিন আগে বিলিন হওয়া সড়ক দেখতে পরিদর্শনে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মিকী মারমা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দেন। তবে এলাকাবাসিরা আপাতত চলাচলের জন্য নিজের অর্থায়নে ও উদ্যেগে বিলিন অংশে তৈরি করেছেন বাঁশের সাকো। ওই সাকো তাদের একমাত্র ভরসা। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে নিত্যকর্ম সারেন এলাকাবাসি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঝের পাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সোনাইছড়ির পাহাড়ি ছড়া। ছড়ার ওপর রয়েছে একটি সেতু। অতিবৃষ্টির ফলে পাহাড়ের প্রবল ঢলের পানি ছড়ায় কানায় কানায় ভরপূর হয়। এতে সেঁতুর দক্ষিণ পাশের রাস্তায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। ঢলের প্রবল স্রোতে ওই রাস্তার ভাঙন দু’শমিটার দৈর্ঘ্যের খাদে পরিণত হয়। তাই জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙনের ওপর বাঁশ-গাছ দিয়ে সাকো বসিয়েছে। এ সাকো দিয়ে পারাপার করে গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষ। তবে সাকো পারাপারে নারী-শিশু ও বয়স্কদের অসুবিধা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ পারভেজ, আজিজুর রহমান, বাম্পার মিয়া, ছমিউল্লাহ, সিএনজি চালক কামাল হোসেন, কমরুন্নাহার, নাছিমা আক্তার, ফাতেমা বেগম বলেন, এলাকাটি পাহাড় বেষ্টিত। পাহাড়ের সাধারণ মানুষ সব্জি, লাকড়ি,পানসহ নানা কৃষিজ পণ্য, বনজ সম্পদ আহরণ করে। এ সড়কটি আমাদের একমাত্র ভরসা। এসব পন্য হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তাছাড়া দু’টি নূরানী মাদ্রাসা ও মসজিদ-মক্তবে যাতায়াতে এ সড়ক ব্যবহার করা হয়। সড়কের অংশটি বানের পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পরছেন।
টৈটং ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন সিকদার বলেন, এ সড়ক বিলীন হওয়ায় বর্তমানে পাঁচটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা থমকে গেছে। চরম কষ্টে আছে এখানকার মানুষ। সড়কটি দ্রুত সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পেকুয়ার প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, সড়কটির ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে। এটি দ্রুত সংস্কারে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জনসাধারণের দুর্দশা লাঘবে অতিবৃষ্টির পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়া সড়কটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।