কাইছারুল ইসলাম, মহেশখালী।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে বড় মহেশখালী ইউনিয়নের বৃহত্তর ফকিরা কাটা এলাকায় জনবসতি শুরু, সেই থেকে ধীরে ধীরে ঘনবসতি হয়ে উঠছে এলাকাটি। হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসা, পাকা-সেমি পাকা বাড়ি ঘর, দিন দিন বাড়ছে জনবসতি।
পরবর্তীতে বৃহত্তর ফকিরা কাটা বিভক্ত হয়ে গড়ে উঠে বড় ডেইল, শুকরিয়া পাড়া, পাহাড় তলী সহ অসংখ্য এলাকা।
বড় মহেশখালী ইউনিয়নের শুকরিয়া পাড়া বাজারের উত্তর প্রান্তে বাইতুল আমান জামে মসজিদ সংলগ্ন শুকরিয়া পাড়া-পাহাড়তলী সড়কটি যেভাবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়ে আছে, তেমনি হচ্ছে না পাহাড়ি ঢল চলাচলের ড্রেন। বড় মহেশখালী ইউনিয়নের সিংহভাগ জনগোষ্ঠীর পেশা কৃষিকাজ ও পান চাষ। এ-ই পান চাষী ও কৃষকগণ বৃহত্তর পাহাড়তলীর বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে পানের বরজ ও কৃষি ক্ষেত খামার করে থাকে। কিন্তু তাদের জন্য নেই যাতায়াতের কোনো সু-ব্যবস্থা। এতে করে স্হানীয় জনগোষ্ঠী, প্রান্তিক কৃষক-পান চাষি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
প্রান্তিক কৃষক ও পান চাষীদের কৃষি কাজে ব্যবহৃত কৃষি সামগ্রী কাঁধে বহন করে ক্ষেতে নিয়ে যেতে হচ্ছে, আবার সারাদিন পানের বরজ ও ক্ষেতে কাজ করে শেষে সন্ধ্যায় কৃষি পণ্য ও পানের ভার কাঁধে বহন করতে হচ্ছে এইসব প্রান্তিক কৃষকদের।
বড় মহেশখালীর এই বৃহত্তর এলাকার বিশাল এক জনগোষ্ঠী কৃষি ও পান চাষি কৃষি পণ্য উৎপাদন ও পানের বরজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, কিন্তু সড়কটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ না হওয়ায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও পান বাজারজাত করতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রান্তিক কৃষক ও পান চাষিদের।
বুধবার উপজেলার বড় মহেশখালীর শুকরিয়া পাড়া-পাহাড়তলী সড়ক ঘুরে দেখা যায়- দীর্ঘ কয়েক বছর পূর্বে নির্মিত হওয়া এই সড়কটি সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই সাথে চলতি বছর ভারী বর্ষণের ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থান পাহাড়ি ঢলের কারণে ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বর্ষার মৌসুমে উক্ত সড়কে পাহাড়ি ঢল নামায় সড়কটি দিন দিন চালাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজারো কৃষক, পান চাষী, ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চলাফেরা।
সড়কটি প্রতি বছর এলাকাবাসীদের উদ্যোগে কিছুটা সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হলেও, বর্ষার মৌসুমে ভারি বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে সড়কটি ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়।
এলাকাবাসী সহ কয়েকজন পান চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে যাচ্ছে, সড়কটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ না হলে যেকোনো মূহুর্তে অপ্রীতিকর বড় দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে, তাছাড়া রাতের বেলায় চলাচল খুবই কষ্টকর। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার পরিদর্শনে আসলেও সড়কটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে জানায় স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্হানীয় এক বাসিন্দা জানান, বড় মহেশখালীর অধিকাংশ কৃষক ও পান চাষি এই এলাকার বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষি ক্ষেত খামার ও পানের বরজ করে থাকে, তাঁরা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার ও ড্রেন নির্মাণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে মহেশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শরিফ বাদশা’র সরকারি নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সড়কটি আরসিসি ঢালাই দ্বারা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এখন যেহেতু বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব, তা-ই আশা করি করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর স্বাভাবিক অবস্থা হলে আগামী অর্থ বছরে হয়তো অনুমোদন পেতে পারি। তখন সড়কটি আরসিসি ঢালাই দ্বারা সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা সহ পাহাড়ি ঢল চলাচলের ড্রেন নির্মাণ করা হবে”।