এম. শহীদুল ইসলাম, কুতুবদিয়া, কক্সবাজার।
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। এখানকার বাসিন্দাদের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম সাগরে মৎস্য আহরন। বাংলাদেশ সরকার সামুদ্রিক জলসীমায় গত ১৫ এপ্রিল থেকে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন সাগরে মৎস্য আহরন নিষিদ্ধ করে। ওই ৫৮ দিন জেলেরা কর্মহীন বেকার থাকে। এ সময়ে সরকার কুতুবদিয়ার নিবন্ধিত ১০ হাজার ৯৫৯ জন জেলের বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দুই কিস্তিতে ৮৬ কেজি করে চাউল দেয়। প্রথম কিস্তি ৫৬ কেজি এবং দ্বিতীয় কিস্তি ৩০ কেজি করে চাউল। সরকার ঘোষিত বন্ধের ২৪ দিন পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনও প্রথম কিস্তির চাউল বিতরণ শুরু করতে পারেনি।
কুতুবদিয়া উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ভিজিএফ কর্মসূচির জন্য এখনও চাউল বরাদ্দ হয়নি। গত বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১০ হাজার ৯৫৯ জন জেলেকে মোট ৯৪২.৪৭ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্ধ দেয়া হয়ে ছিলো। এরমধ্যে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা হচ্ছে, উত্তর ধূরুং ইউনিয়নে ২ হাজার ৮১৩ জন, দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৯৯ জন, লেমশীখালী ইউনিয়নে ৯৯০ জন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে ৭৭৬ জন, বড়ঘোপ ইউনিয়নে ২ হাজার ৪৬২ জন এবং আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে ২ হাজার ৪১৯ জন। কিন্তু, নিষেধাজ্ঞা আরোপের ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও জেলেদের ভিজিএফ কর্মসূচির চাউল বরাদ্দের দাপ্তরিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।
কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বাসিন্দা সরকার নিবন্ধিত জেলে সরওয়ার আলম জানান, এখনও চাউল না পাওয়ার কথা। তিনি ছাড়াও সরকার নিবন্ধিত অনেক জেলে জানান, তারা সরকারের বরাদ্ধকৃত ভিজিএফ চাউলের প্রথম কিস্তির এখনও পাইনি। তবে, এবার দীর্ঘদিনের একটি সমস্যার অবসান হয়েছে। আগে ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রায় ৩৯ দিন আগেই উঠে যেত। এতে বেশির ভাগ মাছ ধরা পড়তো ভারতীয় জেলেদের হাতে। এবার ভারতীয় জেলেদের সেই সুযোগ নেই।
কুতুবদিয়া মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব দৈনিক বর্তমানকে জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে দুই কিস্তিতে সরকার নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে চাউল বিতরণ করে থাকেন। এবারে এখনও বরাদ্দ আসেনি এবং নতুন করে জেলেদের নিবন্ধনও করা হচ্ছে না। তবে, খুব শিগগিরই উপজেলার ১০ হাজার ৯৫৯ জন জেলেদের মাঝে প্রথম কিস্তির চাউল বিতরণ করা হবে। তিনি আরও জানান, কুতুবদিয়া চ্যানেল, বঙ্গোপসাগর, মাছঘাট, বাজার, অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিনই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার ২৪ দিনে মোট ২১১ টি বেহুন্দী জাল, ১ লক্ষ ৫৪ হাজার মিটার হুন্দ্রা ও কারেন্ট জাল জব্দ করে। পরে, এগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এসময়ে লইট্টা মাছ ও হুন্দ্রা মাছ ১২০ কেজি জব্দ করে কুতুবদিয়ার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় বিতরন করা হয়েছে।