লামা(বান্দরবান)প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামা উপজেলার ০৩ নং ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন ইউপি সদস্য।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে তারা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।
অনাস্থা প্রদানকারীরা হলেন,ইউনিয়নের সদস্য, মংমেগ্য মার্মা, কুতুব উদ্দিন মিয়া, মোঃ হোছাইন মামুন, মোঃ আবু ওমর, আব্দু রহিম,মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ জিয়াবুল, মোঃ ইসমাইল, আপ্রুসিং মার্মা, জোসনা আক্তার লিলি, শাহানা আক্তার, আনাই মার্মা সুমি।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ০৩ ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বিভিন্ন প্রকল্প ও অর্থ আত্মসাত করে আসছে, তিনি একাধিকবার আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের থেকে বিভিন্ন সময়ে অলিখিত কাগজে স্বাক্ষর করে নিতেন। তার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র ব্যবহার করে সরকারী বরাদ্ধকৃত প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করতেন। ইতিপূর্বে ২০২১-২২ ইং অর্থ বছরে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর আওতায় বরাদ্ধকৃত ৮০.০০ মেঃ টন চাউল ও ২০.০০ মেঃ টন গম (যাহার জিও নাম্বার- ২৯.০০.০০০০.২২৩.০২.০০৫.২০২১-২২, তারিখ- ২৩/০১/২০২২ ইং) এর বিপরীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে উক্ত প্রকল্পটি যাবতীয় বরাদ্ধ সম্পূর্ণরূপে আত্মসাৎ করেন।
এই ছাড়াও, ০৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন সময়ে সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত আরো আনুমানিক ১৫০ মেঃ টন চাউল বরাদ্ধের অনুকূলে কোন প্রকার প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে চেয়ারম্যান তা সম্পূর্ণভাবে আত্মত্মসাৎ করেন।চেয়ারম্যানর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আমরা মেম্বারার প্রতিবাদ করিলে, চেয়ারম্যান কোনরূপ কর্ণপাত না করে তাহার অনিয়ম ও দূর্নীতির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তিনি চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হইতে ইউনিয়ন পরিষদ হইতে ইউপি সদস্য হিসাবে আমরা মেম্বারের বিভিন্ন প্রকার ভাতা ও বোনাসের টাকা আমরা মেম্বারদের প্রদান না করে উক্ত ভাতা ও বোনাসের যাবতীয় টাকা চেয়ারম্যান নিজে আত্মসাৎ করেছেন। তা ছাড়াও চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী যথাযথভাবে মাসিক সভা ও অন্যান্য সভা আহবান না করে আমাদের নিকট থেকে প্রভাব বিস্তারের করে অলিখিত কাগজে ও সভার কার্যবিবরণী বইয়ে স্বাক্ষর নিয়ে নেন।
তা ছাড়াও, ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত নেওয়া মায়ানমারের নাগরিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বহু মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের জাতীয়তা সনদপত্র দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তারা অভিযোগে আরো বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে মুজিব শতবর্ষের উপহারস্বরূপ গৃহহীন মানুষের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত প্রতি ঘরের বিপরীতে বরাদ্ধপ্রাপ্ত ব্যক্তির থেকে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করে আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে ০৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুর হোসেন চৌধুরী বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। কেন আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে, তাও জানি না। আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের লিখিত অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।