শাহেদ হোছাইন মুবিন, উখিয়া :
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৬জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ২০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে উখিয়া ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অস্ত্রসহ এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটক যুবক ক্যাম্প-১১ এর আবুল কালামের ছেলে মো. মুজিবুর রহমান(১৭)।
আটককৃত যুবকের কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটারগান,৬ রাউন্ড গুলি ও একটি দেশীয় ছুরি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনার পর থেকে পুরো ক্যাম্পজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
শুক্রবার(২২ সেপ্টেম্বর) ভোরে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ময়নারঘোনা ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা এ হামলা চালায়।
নিহতরা হলো,ক্যাম্প-১২ এর মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ইদ্রিস,ক্যাম্প-৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন,ক্যাম্প-১৮ এর নুরুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র আজিজুল হক,ক্যাম্প-১৮ এর আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমিন।
পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও তিনজন মারা যায়। তারা হলেন, ক্যাম্প-১৮ এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে নুর আলম ওরফে হালিম(৪৫),ক্যাম্প-২৪ এর মাদ্রাসা শিক্ষক রহিমুল্লাহর ছেলে হামিদুল্লাহ(৫৫)।
ক্যাম্প-১৮ এর নুর মোহাম্মদ এর ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র নুর কায়সার(১৫) মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন বলে এপিবিএন সূত্রে জানা গেছে।
এপিবিএন ও পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে উখিয়া থানায় নিয়ে আসেন। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিহতদের লাশ উখিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয় বলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহাম্মদ সনজুর মোর্শেদ জানিয়েছেন।
ঘটনার পরপরই কক্সবাজারের প্রশাসনিক উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
৮ এপিবিএন এসপি মো. শিহাব কায়সার খান বলেন,শুক্রবার ভোরে গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ৬জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,ক্যাম্পের পরিস্থিতি এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ক্যাম্পে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে এপিবিএন কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে দুর্বৃত্তের গুলিতে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ নিহত হয়। এর পর থেকে ক্যাম্পে উত্তেজনা বিরাজ করছে।