নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালায় এলাকার ত্রাস হয়ে উঠেছে হালদার পাড়ার আলী আহমদের পুত্র জসিম উদ্দিন (৩০)। সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের এক শীর্ষ নেতার আশ্রয়ে জসিম এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে গোপনে ইয়াবা পাচার, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি ও বনের অবৈধ কাঠ পাচারের অভিযোগ।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে- ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মখেলুজ্জামানকে নিয়মিত মাশোয়ারা দিয়ে জসিম এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। রামু রাবার বাগান এলাকায় বৈধ গাছ ব্যবসার কথা বলে সে মূলত পাহাড় কাটা, ইয়াবা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছে তার এলাকার একাধিক লোক।
এভাবে সে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকার প্রভাবে সে এলাকায় কাউকেই পাত্তা দেয় না। এবং অসহায় গরীব প্রতিবেশীদের উপর নিয়মিত জুলুম অত্যাচারও চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে তার একাধিক প্রতিবেশী।
এমনকি জসিমের বিরুদ্ধে উঠে আসা বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করতে গেলে সাংবাদিকদের উপরও চড়াও হতে দেখা গেছে তাকে বিভিন্ন সময়।
স্থানীয়রা বলছেন, অন্য এলাকা থেকে আসা জসিম স্বপরিবারে থাকত জবর দখল করা অন্যের জমিতে। এখন কোটি টাকার মালিক জসিমের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পায় না। অভিযোগ রয়েছে, রামুর রাবার বাগান দখল করে রেখেছে দীর্ঘদিন ধরে। সেই রাবার বাগানের পাহাড়ী ঢালায় জসিমের আশ্রয় আত্মগোপনে রয়েছে জেলার কয়েক ডজন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী। সেখান থেকে শত শত কোটি টাকার ইয়াবা পাচার করছে জসিমের নেতৃত্বে থাকা সিন্ডিকেটটি। কারণ তার পেছনে রয়েছে অদৃশ্য রাজনৈতিক শক্তি। নানা অভিযোগ জসিমের বিরুদ্ধে। চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি তার প্রধান কাজ।
স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘিরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন জসিম। অপরাধ চক্রের সহযোগিতায় বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। নিজেকে একচ্ছত্র রাজা মনে করে ত্রাস সৃষ্টি করে যাচ্ছেন জসিম।
জানা যায়- প্রবাস ফেরত বেকার যুবক জসিম উদ্দিন অবৈধ ভিসায় ধরা পড়ার কারণে দুই মাসের মাথায় দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে বিপুল অর্থবিত্তের স্বপ্নে বিভোর এই যুবক ধীরে ধীরে ইয়াবা পাচার ও কাঠ চোরাচালানের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
এসব কাজ নির্বিঘ্নে করতে জোয়ারিয়ানালার হালদার পাড়া ভিত্তিক একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তুলে। এই গ্যাংয়ের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ জসিমের হাতে। ইয়াবা ও কাঠ পাচার হতে অর্জিত টাকায় সে বিশাল অংকের একটি টাকা এই কিশোর গ্যাংয়ের পেছনে ব্যায় করে থাকে। ফলে এলাকায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে জসিম।
এব্যাপারে জোয়ারিয়া নালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন প্রিন্সের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন- জসিমের বেপরোয়া চালচলনের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে তাহলে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।