সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশ কক্সবাজার এর আহবায়ক কমিটি গঠিত:খোকন আহবায়ক ,শাহীন যুগ্ন আহবায়ক ও বাবুল সদস্য সচিব রিসার্চ ইনিশিয়েয়েটিভস্ বাংলাদেশ(রিইব) অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত সবার আগে ৫ আগষ্টের হত্যাকারীদের বিচার পরে অন্য কিছু-কক্সবাজারে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান কক্সবাজার পৌরসভার ইনডোরে বেলাল উদ্দীন চৌধুরী ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন ঈদগাঁও আমির সুলতান এন্ড দিল নেওয়াজ বেগম হাইস্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান  সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক বদলী হওয়ায় নতুন প্রশাসক শহীদুল ইসলামকে  নিয়োগ  নাইক্ষ্যংছড়িতে সেতুর অভাবে ২০ গ্রামের হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে মাতারবাড়ীতে শ্বশুরবাড়ি থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ৮ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের আগমনে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরলেন-অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী মহেশখালীতে সাগরে মিলল তরুণের লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা

রামুতে তামাক চাষে নদী ও বনাঞ্চল হুমকির মুখে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৭৭ বার পঠিত

রামু প্রতিনিধিঃ

কক্সবাজারের প্রধান দুই নদী বাঁকখালী ও মাতামুহুরী। কয়েক বছর আগে এই দুই নদীর পাড়ে হতো শাকসবজির চাষ। তবে এখন তামাক চাষের দখলে এসব জমি। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ কৃষিজমিতে হচ্ছে তামাক চাষ। এতে নদী ও বনাঞ্চল হুমকিতে পড়েছে।
রামু উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৭০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। নদীর তীরে করা তামাক চাষের সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। মাঠের প্রায় ৬০ শতাংশ ফসলি জমিতে তামাকের আবাদ হয়েছে।
এদিকে, চকরিয়ায় ৬২০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন।
রামু উপজেলার রাজারকুল, মৌষকুম, গর্জনিয়া নাপিতেরচর, কাউয়ারখোপ, মনিরঝিল, ফাক্রিকাটা ঘুরে দেখা গেছে, বাঁকখালী নদীর বুকে এবং দুই তীরে শুধু তামাকের আবাদ। পাশাপাশি এলাকার ফসলি জমিগুলোও তামাকের দখলে। একই চিত্র চকরিয়ার বোয়াবিলছড়ি, কাঁকড়া, ফাঁসিয়াখালী, মানিকপুর, সুরাজপুর ও মাতামুহুরীর বুকে এবং দুই পাড়ে।
নদীবেষ্টিত এসব এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তামাক চাষ না করতে সরকারি নির্দেশনামূলক সাইনবোর্ড দেখা গেছে।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫-এর ধারা ৫ ও ১১-তে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে তামাকজাত দ্রব্যের পৃষ্ঠপোষকতা ও তামাকজাতীয় ফসল উৎপাদন, ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণের শর্ত। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো এসবের কিছুই মানছে না। তামাক চাষ প্রসারে উল্টো প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষকদের।
কচ্ছপিয়ার নাপিতেরচরের কৃষক মো. আবদুস ছালাম ৭ কানি জমিতে তামাক চাষ করেছেন। তিনি জানান, একরপ্রতি ১০ হাজার টাকা সুদমুক্ত ঋণ দিয়েছে কোম্পানি। পাশাপাশি বীজ, সার ও পোকা দমনে বিশেষ ধরনের বিষও দিয়েছে কোম্পানিটি।
মানিকপুর লামারপাড়ার কৃষক জলিল আহমেদ বলেন, তামাক চাষে মোটা টাকা পাওয়া যায়। তা ছাড়া তামাক কোম্পানি সুদমুক্ত ঋণ দেয়।
শীতকালীন শাক-সবজির দাম না পাওয়ায় অনেকেই তামাক চাষে ঝুঁকছেন বলে জানান কৃষকেরা।
রামু ও চকরিয়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই দুই উপজেলার সেসব জমিতে শীতকালীন শাক-সবজি আবাদ হতো, এখন অধিকাংশ জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে।
নদীর বুকে ও তীরে তামাক চাষের ফলে কী ক্ষতি হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে নদী নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, ‘তামাক চাষের ফলে আমাদের প্রতিবেশগত ক্ষতিটা হবে বেশি। দিনদিন এই চাষ বৃদ্ধির ফলে আমাদের উৎপাদনমুখী কৃষি ও ভয়াবহ কীটনাশক ব্যবহারে নদীর পানি ও মাছের স্থায়ী ক্ষতি হবে, যা অপূরণীয়।’
সূত্রমতে, ৪০ শতক জমির তামাক পোড়াতে ৫০ মণ লাকড়ি প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে এ বছর ৭৯০ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত তামাক পোড়াতে প্রায় ১০ হাজার টনের বেশি লাকড়ির প্রয়োজন হবে। যার অধিকাংশ আসে টেকনাফ, ফাঁসিয়াখালী ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গহিন বনাঞ্চল থেকে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক জিয়াউর রহমান কল্লোল বলেন, ‘বাঁকখালী নদী বাঁচাবার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা চেয়ে বেলা জনস্বার্থে একটি মামলা করেছে। এর আদেশও পেয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিকতা না থাকলে আসলে বাস্তবায়ন অসম্ভব। পাশাপাশি বন উজাড় রোধে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। সরকারিভাবে কক্সবাজারের প্রধান দুই নদীর জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি তামাক আবাদে নিয়ন্ত্রণ আনতে যথোপযোগী আইন ও প্রয়োগের গুরুত্বও রয়েছে বলে জানান তাঁরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs