কাইছারুল ইসলাম (মহেশখালী প্রতিনিধি)।।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে অতি বৃষ্টি, পাহাড়ী ঢল ও সামুদ্রিক জোয়ারের ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। প্লাবিত হয়েছে প্রায় শতাধিক গ্রাম। বন্যার পানি নেমে যাবার পর দেখা দিয়েছে ভাঙন। সামনে আবারও পূর্ণিমার জোয়ার,যার কারণে বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশে কাজ শুরু করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এমন দায়সারা কাজের কারণে আরও ক্ষতি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জহির এন্টারপ্রাইজ নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে বালি উত্তোলন না করায় যেকোন মুহূর্তে জিও ব্যাগ জোয়ারের পানিতে বিপর্যস্ত হতে পারে বলে ধারণা করেন তারা।
মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে দেওয়া হচ্ছে জিও ব্যাগ। এই বাঁধ থেকে মাত্র ৭-৮ ফুট দূরত্বে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে নির্মীয়মান জিও ব্যাগ গুলো।
স্থানীয় আবদুর রশিদ বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ না হওয়ায় জোয়ারের পানির কারণে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কর্তৃপক্ষ বেড়িবাঁধ ঘেঁষে বালু উত্তোলনের কারণে বেড়িবাঁধের জিওব্যাগ ধসে পড়ছে প্রতিনিয়ত। এটাও ধসে পড়বে পানি আসলে।
মোহাম্মদ আলী নামে একজন বলেন, জিও ব্যাগ ঘেষে বালি উত্তোলন না করে দূর থেকে বালি নেওয়ার জন্য ওনাদের বারবার বলা হয়েছে । কিন্তু ওনারা শুনছে না। বরং যাঁরা বলে তাদেরকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখানো হয়।
গতকাল মহেশখালীতে সরজমিনে দেখা যায়, মাতারবাড়ী বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে-উপচে জেয়ারের পানিতে শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এসব ভাঙা অংশে জিওব্যাগের কাজ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসব জিওব্যাগে বালু ভর্তি করার জন্য মাতারবাড়ীর সমুদ্রসৈকত থেকে বেড়িবাঁধ ঘেঁষে বালু নিচ্ছেন তারা। এর কারণে বেড়িবাঁধ আরও ঝুঁকিতে পড়ছে। নিচের মাটি সরে গিয়ে যেকোন মুহূর্তে এটি ধসে পড়বে। ফলে পুরো বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় মাতারবাড়ী বিলীন হয়ে যেতে পারে, অস্তিত্ব সংকটে পড়বে লক্ষাধিক মানুষ। ইতোমধ্যে অনেকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। পূর্বে এভাবে সংস্কারের কারণে বেড়িবাঁধ প্রতিনিয়ত ভাঙছে, পানি ধাক্কা লাগলে এগুলো সাগরে তলিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানান।
মাতারবাড়ী স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম কুতুব উদ্দীন নেওয়াজ বলেন, এভাবে বেড়িবাঁধ ঘেঁষে বালু নেওয়ার কোন আইন নেয়। এর কারণে বেড়িবাঁধের ভাল অংশ ও ভেঙে যাবে। মাতারবাড়ী রক্ষার্থে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জহির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী, কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহির আলম বলেন-আমরা নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে বালি উত্তোল করতেছি। তিনি আরো বলেন স্থানীয় ভাবে সেলিম নামে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে,সে যদি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে বালি না তোলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান খোলা কাগজকে বলেন, এই বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামীকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ না করাই ওনার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।