মহেশখালী(কক্সবাজার)সংবাদদাতা ::
এশিয়া বিখ্যাত দ্বীনি সংঘটন আনজুমান এ রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট।যেটির অধীনে সারা বাংলাদেশে প্রায় দুই শতাধিক মাদরাসা পরিচালিত হয়।তন্মধ্যে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে “তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা” নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।২০০৪ইং সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে।কিম্তু বর্তমান সুপার আবদুর রহমান যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানটিতে রশিদ ছাড়া বিভিন্ন টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
আনজুমান ট্রাষ্টের নিয়ম অনুযায়ী কোন টাক রশিদ ছাড়া আদায় না করার নির্দেশ থাকলেও নিয়ম মানছেন না বর্তমান সুপার আবদুর রহমান।নিজ নিয়মে পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি এমনটা অভিযোগ করেছেন এলাকাকাবাসী।
সূত্রে জানা যায়,২০২৩ ইং সালে যোগদানের পর নানা অনিয়ম করে আসছেন বর্তমান সুপার আবদুর রহমান।অতীতে সকল টাকা রশিদ মূলে আদায় করা হলেও তাঁর যোগদানের পর নিয়ম যেন পাল্টে যায়। পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ, রেজিষ্ট্রেশন, প্রবেশপথ প্রদান, সকল একাডেমিক সনদ, প্রত্যয়ন, ছাড়পত্র প্রদানসহ বিভিন্ন টাকা তিনি রশিদ ছাড়া আদায় করেন।এসব টাকা কোথায় যায় এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের?
বিষয়গুলো জানতে ২৪ ইং সালের কয়েকজন দাখিল পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানান,আমাদের ফরম পূরণ বাবদ ২৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে এবং আমরা যারা টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ করেছি তাদের থেকে প্রতি বিষয়ে ৫০০ টাকা করে আদায় করেছে,আর প্রবেশপথ বাবদ ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।তবে আমাদের কোন রশিদ দেওয়া হয়নি।
দাখিল ২০২৪ ইং সালের একজন পরীক্ষার্থী জানান,আমরা কক্সবাজার তৈয়্যবিয়ায় পরীক্ষা দিয়েছি,,কিন্তু ফরম পূরণের ২৫০০ টাকা এবং পরীক্ষায় খারাপের জরিমানা ৫০০ টাকা,মোট ৩০০০ টাকা আমাদের সুপারকে দিয়েছি যার রশিদ পায়নি।কিন্তু কক্সবাজার তৈয়্যবিয়ায় প্রবেশপত্রের জন্য ৪৫০ টাকা দিয়েছি যার রশিদ আমরা পেয়েছি।
২০২৩ইং সালের কয়েকজন দাখিল পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানান,ছাড়পত্র এবং নম্বরপর্দ বাবদ আমাদের থেকে ৭০০ টাকা করে নিয়েছে আমাদের সুপার কিন্তু আমাদের কোন রশিদ দেওয়া হয়নি।
২০২৩ইং সালের পুরাতন ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান,আমাদের ১ বিষয়ের ফরম পূরণ বাবদ একহাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে,কিন্তু আমাদের কোন রশিদ দেয়নি।
২০২৩ইং সালের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষার্থী জানায়,রেজিষ্ট্রেশন বাবদ প্রতিজন শিক্ষার্থী থেকে আমাদের আবদুর রহমান (সুপার)হুজুর ৪০০ টাকা করে নিতে বলেন,আমি টাকাগুলো নিয়ে সুপার হুজুরকে দিয়ে দি,রশিদের বিষয় জানতে চাইলে সে কাউকে রশিদ দেয়নি বলে জানান।
এদিকে ২০২৩ইং সালের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জাননা,আমাদের শ্রেণী শিক্ষক আমাদের রেজিষ্ট্রেশনের জন্য ২০০ টাকা করে নিয়েছে কিন্তু আমাদের কোন রশিদ দেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে শ্রেণী শিক্ষক হেফাজের সাথে কথা বললে তিনি ৬২ জনের টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে, যাদের কাউকে রশিদ দেওয়া হয়নি।
টাকাগুলো সে সুপারকে গুনে বুঝিয়ে দিয়েছে এবং কার টাকা জমা নিয়েছিল তার হিসাব ও নাম ঠিকানা তার কাছে জমা আছে বলে জানান।
এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত সুপারের সাথে বহুবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাতারবাড়ী তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সভাপতি কামরুল হাসান হানিফ জানান,রশিদ বিহীন টাকা নেওয়ার সুযোগ নাই।যদি রশিদ বিহীন টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ এর পর্যায়ে পড়ে,যদি এমনটা করে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনজুমান ট্রাষ্ট কক্সবাজার জেলার পাবলিক রিলেশান অফিসার একরামুল হক রানা বলেন, বিনা রশিদে টাকা আদায়ের সুযোগ নেই। তবে কেও টাকা আদায় করে যদি পরে রশিদ দিয়ে দেয় তাহলে সমস্যা নেই। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখবো যদি অনিয়মের কিছু পায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।
এ বিষয়ে জানতে আনজুমান-এ রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের জেনারেল সেক্রেটারি আনোয়ার সাহেবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী টাকা আদায় করলে রশিদ দিতে হবে।রশিদ বিহীন টাকা আদায়ের সুযোগ নাই।যদি নেয় ওনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।