নিজস্ব প্রতিবেদক,মহেশখালী।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে দীর্ঘদিনের ব্যবহারের রাস্তা বন্ধ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে। কুতুবজোম ইউনিয়নের খোন্দকারপাড়া গ্রামে ওই রাস্তাটি বন্ধ করায় গ্রামের সাধারণ মানুষ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন ৩ মাসেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নিজেদের ভীষণ অসহায় মনে হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খোন্দকারপাড়া গ্রামের নুরুল কবির ও জুনু বিবি গত ১ই (মার্চ) সকালে আনুমানিক ১০টায় খোন্দকার পাড়ায় অবস্হিত দীর্ঘ দিনের চলাচলের রাস্তাটি বাঁশ ও গাছ দিয়ে আটকিয়ে দেয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় ওই রাস্তাটি। এলাকাবাসীর বাঁধা প্রদানেও তারা ওই রাস্তা খুলে দেয়নি।
অভিযোগকারী মাওলানা মুফিজুর রহমান বলেন, আমিসহ সবাই জনস্বার্থে উপজেলায় একটি অভিযোগ করেছি। খোন্দকারপাড়ার এই রাস্তাটি আমাদের বাপ-দাদার আমলের। সেই যুগ থেকে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। আমরা অন্তত ৩০০ টি পরিবার প্রতিনিয়ত এই রাস্তাটি ব্যাবহার করি। নুরুল কবির ও স্ত্রী জুনু বিবিও তার ছেলেরা গায়ের জোড়ে এত দিনের পুরাতন চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। আমরা এলাকাবাসী বাঁধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগালি শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে মারমুখো আচরণ শুরু করে দেয়। তাৎক্ষণিক ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান’কে বিষয়টি জানাই। পরে বাধ্য হয়ে অভিযোগ করি। মহেশখালী থানা পুলিশ এসে সার্বিক দিক তদন্ত করে বিষয়টি অমানবিক হওয়ায় দ্রুত ওই বাঁশের বেড়া সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার পরেই আবারো রাস্তায় গাছ দিয়ে রাখে যাতে কোন মানুষ, যেতে আসতে না পারে। শুক্রবারও একই অবস্থা হয়ে আছে। ওরা এখন ওই রাস্তায় বাঁশ পলিথিন দিয়ে আবার বড় বড় বস্তায় গাছ ঢুকিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে ওই রাস্তায় যাতায়াত একেবারে অসম্ভব হয়ে গেছে।
রাস্তাটি নতুন নাকি পুরাতন সে ব্যাপারে জানতে চাইলে এলাকাবাসীর অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। তারা জানায়, এই রাস্তাটি ২০-৩০ বছর আগের। এই রাস্তার ওপর নির্ভর করে অনেকেই জমিজমা কিনেছে ও ঘরবাড়ি করেছে। সম্প্রতি জমির সীমানা বিরোধিতার ফলে একই মালিকের দুই বাড়ির মাঝে পরে যায় রাস্তাটি। এরই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রায়ই রাস্তাটি বন্ধ করতে চায়। এলাকাবাসী খুলে দিলেও পূনরায় এখনও রাস্তায় খড়কুড়া,পাতাপচা,সবুজ উদ্ভিদ খামাল করে রাখা আছে। ফলে কেউ পারাপার হতে পারছেনা শান্তিতে।
রাস্তা বন্ধের ব্যাপারে নুরুল কবির কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, আমরা রাস্তা বন্ধ করি নাই। আমাদের কেনা জমিতে আমাদের যা ইচ্ছে করব। আর কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। এমনকি গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেবেন না বলেও জানান।
কুতুবজোম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সালামত সিকদার জানান, রাস্তা বন্ধের ঘটনাটি শোনামাত্র ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক নিচ্ছে না, এলাকাবাসী চরমভাবে ক্ষুদ্ধ।
কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামাল জানান, তবে জমির প্রকৃত মালিক যারাই হোক না কেন সরকারি রাস্তা আটকে দেওয়া অপরাধ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীকি মারমা জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।