চকরিয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধিঃ
সোমবার থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বর্ষণ উজান থেকে আসা ঢলের পানি ও জোয়ারের পানি মাতামুহুরী নদীর বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর তিনকূল উপচিয়ে বিভিন্ন
ইউনিয়নের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।ফলে পানি বন্ধির শঙ্কায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
জনপ্রতিনিধিরা জানান,কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট বৃদ্ধি হওয়ার পানির ফলে পৌরসভা সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।এতে র্দূভোগ পোহাচ্ছে পানি বন্ধি এলাকার মানুষ।ইতিমধ্যে পানিতে ডুবে ঘরবাড়ী,গোয়াল ঘর,ক্ষেত-খামার ডুবে ব্যাপক ক্ষতি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।যেমন বৃষ্টি হচ্ছে তেমনি বাতাসের গতিবেগও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
জানা গেছে,চকরিয়া পৌরসভার ১,২,৩ ও ৮ নং ওয়ার্ড সহ প্রায় নিচু এলাকাতে পানি ডুকে ঘরবাড়ীতে বসবাস করা দায়ে হয়ে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান স্হানীয় একজন সংবাদকর্মী।এছাড়াও উপজেলার লক্ষ্যারচর,কৈয়ারবিল,বিএমচর,পূর্ব বড় ভেওলা,চিরিংগা, কোণাখালী,শাহারবিল,সুরাজপুর-মানিকপুর,
বরইতলী,হারবাং ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
জানতে চাইলে লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় এলাকা পানিতে ভাসছে।এভাবে আর কয়েকদিন বৃষ্টি হলে পুরো ইউনিয়নের দ্বিতীয়তাংশ ডুবে যাবে।ডুবে যাওয়ার কারণ ইউনিয়ন টি মাতামূহুরী নদীর তীরবর্তী।ঢলের পানি আর জোয়ারের পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা বিদ্যামান।
কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মক্কি ইকবাল বলেন,আমার ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ডে মাতামুহুরী নদীর পানির ডুবে এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল বলেন,বেড়িবাঁধের ভিতরের আনিসপাড়া,সিকান্দার,মাফিয়াবাপের,মাসুয়াপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও মাতামূহুরীর নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বেড়িবাঁধ উপচিয়ে বিভিন্ন এলাকাতে পানি ডুকছে।
চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জসীম উদ্দিন বলেন, আমার এলাকায় মাতামুহুরী নদীর পানি ডুকে কিছু-কিছু পরিবারের সমস্যা দেখা দিয়েছে।এছাড়া আমার এলাকাজুড়ে মৎসঘের রয়েছে।এতে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়।তাহলে মৎসঘের ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে।
শাহারবিলের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল বলেন,মাতামূহুরী নদীতে ঢলের পানি আর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আমার এলাকার জলদাশপাড়া, মাষ্টার পাড়ার ১৫/২০টি বাড়ী ও শাহে জামে মসজিদ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ডুবে গেছে।এছাড়া নদীতে পানি বাড়তে থাকার কারণে বিভিন্ন নিচু এলাকার বৃষ্টির পানি নামতে বাঁধা হওয়ায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ডুলাহাজারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল আমিন বলেন,আমার ইউনিয়নের ৬ ও ৮নং ওয়ার্ডের এলাকা ঢলের পানি ও বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে জনর্দূভোগের শেষ নেই।
হারবাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম বলেন,আমার বসতবাড়ী সহ ১ থেকে ৬নং ওয়ার্ড পর্যন্ত এলাকা পুরোটাই পানিতে ডুবে গেছে।ফলে ডুবন্ত এলাকার মানুষের জনজীবন বিপদস্হ।এভাবে বৃষ্টি হলে বন্যায় পুরো ইউনিয়নটি ডুবে যাবে।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আজিম বলেন,সুরাজপুরের দক্ষিণ মাথা ও মানিকপুরের উত্তর মাথার এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
কোণাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম বলেন,আমার এলাকার কাইজ্জারদিয়া,কইন্যারকুম,মরংঘোনার বেড়িবাঁধ ভেঙে উপচিয়ে পড়ে এলাকা প্লাবিত হয়েছে।আজ কইন্যারকুম এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, টানা ভারী বর্ষণে ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে আসা পানি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছি। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদেরকে সরিয়ে নিতে কাজ করছি।