এম.এ.কে.রানা,মহেশখালী।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে লেগ স্পিনারদের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি একটি বিশেষ লেগ স্পিনার ক্যাম্পের আয়োজন করেছে। বিসিবি’র গেইম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের উদ্যোগে গত ছয় মাস ধরে সারা দেশে বিশেষ ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিভাবান লেগ স্পিনাররা অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ এই বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত ২৫ জনের মধ্যে অন্যতম হয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন দ্বীপ মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীর তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় নোমান।
৮ নভেম্বর মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই বিশেষ ক্যাম্পটি শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ এবং পাকিস্তানি লেগ স্পিন কোচ শাহেদ মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েই নোমান প্রমাণ করেন, তিনি দেশের ক্রিকেটে একটি সম্ভাবনাময় নাম।
গত ৩ ডিসেম্বর ক্যাম্পের চূড়ান্ত দেশ সেরা লেগ স্পিনার ১৪ জনের তালিকায় ১২তম স্থান করে নেওয়ার মাধ্যমে নোমান দেখিয়েছেন তাঁর দক্ষতা এবং কঠোর পরিশ্রমের প্রতিফলন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে দেশের ১৪ জন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে বিদেশে পাঠানো হবে উন্নতমানের কোচিং এবং প্রশিক্ষণের জন্য। বিসিবির এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ভবিষ্যৎ তারকা তৈরি এবং তাদের আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটে প্রস্তুত করা।
এটি শুধু নোমানের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং দ্বীপ মহেশখালীর মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার গল্প। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উঠে আসা লেগ স্পিনারদের এই ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক মানের কোচিং প্রদান করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় দলে তাদের জায়গা করে নেওয়ার পথকে সুগম করবে। বিসিবির এই উদ্যোগ শুধু ক্রিকেটের মানোন্নয়নই নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্রিকেট প্রতিভা আবিষ্কারে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
লেগ স্পিন বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটে মানসম্মত লেগ স্পিনারদের অভাব রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। এই দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিসিবি ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ স্পিনার তৈরি করতে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে। নোমানের জন্য এটি নিজেকে আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটে অবদান রাখার এক সুবর্ণ সুযোগ।
নোমান মাতারবাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড লাইল্যাঘোনা এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামাল সওদাগরের পুত্র।
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ীর নোমানের এই অর্জন শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো মাতারবাড়ী এবং মহেশখালীর জন্যই এক গর্বের বিষয়। তার সাফল্য দেখিয়ে দিয়েছে, দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকেই প্রতিভা উঠে আসতে পারে, যদি সুযোগ এবং সঠিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হয়।
নোমানের এই সাফল্যে মহেশখালীর তরুণদের মধ্যে ক্রিকেটের প্রতি নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হবে, আর তার এই যাত্রা হয়তো আরও অনেক তরুণ প্রতিভার পথপ্রদর্শক হয়ে উঠবে।