বিশেষ প্রতিবেদক
টেকনাফের বাহারছড়া উত্তর শিলখালী এলাকার ফয়সাল নামে এক মাদক কারবারি ইয়াবা সহ ঢাকা রমনা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। এঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তার মামলার জিআর নং ৭০৫/২১, যাত্রাবাড়ী থানার এফ আই আর নং ৯২/৭০৫।
আটককৃত মাদক কারবারি মোহাম্মদ ফয়সাল (২২) টেকনাফের আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারী আবু ছৈয়দের ছোট ভাই ও স্থানীয় বাহারছড়া ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সোনা আলী পুত্র।
সে মূলত ২ বছর ৭ মাস ধরে বাহারছড়ার জাহাজপুরা কমিউনিটি ক্লিনিকের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আর তিনি এ চাকরির আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা কারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনে উদাসীন ও গাফেলতী পরিলক্ষিত হয় বলে জানা যায়। এছাড়া ফয়সাল গং প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হলেও কেউ মুখ খুলার সাহস পর্যন্ত করেনি।
এদিকে ফয়সালের আটক হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এক মিশ্রপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা রাজা আবু ছৈয়দ জামিনে বের হয়ে নিজে গা ঢাকা দিলেও তার ছোট ভাই সরকারি চাকরিজীবী ফয়সালসহ একটা বিশাল সিন্ডিকেট দিয়ে ইয়াবা পাচার চালিয়ে গিয়েছে। মূলত সরকারি চাকরিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ছোট ভাই ফয়সালের মাধ্যমে ইয়াবা পাচার করে আসছে বলে অভিযোগ আত্মসমর্পণকারী আবু ছৈয়দের বিরুদ্ধে”।
বলাবাহুল্য, গ্রেফতারকৃত আসামী ফয়সালের বড় ভাই আবু ছৈয়দ ইয়াবা ডন হিসেবে প্রশাসনের তালিকায় আসলে প্রাণাভয়ে বাঁচতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর অবসারপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার পর থেকেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। অধিকাংশ আত্মসমর্পণকৃত ইয়াবা ব্যাপারী জামিনে বের হয়ে এসে আবারো সেই পুরোনা পেশা ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। তবে এবার কৌশল পরিবর্তন করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে মরণনেশা ইয়াবা ব্যবসা। এসব সিন্ডিকেটের কোনো একজন লোক ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেই জানা যায় তারা এখনো কতটা সক্রিয় হয়ে পুরোদমে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে! ফয়সালও একইভাবে নয়া সিন্ডিকেটের সদস্য বলে জানায় স্থানীয় মহল। অন্যদিকে, জব্দকৃত ইয়াবার চালান পুরাতন এক রোহিঙ্গা নাগরিক বশরের বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
ছেলে আটকের পর স্থানীয় মেম্বার সোনা আলী’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “ছেলে আটক হয়েছে সেইটা অন্যের মুখ থেকে শুনেছি। অপরাধ করলেই অপরাধী। এ ধরনের অপরাধী ছেলেদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই”!