পেকুয়া প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরীর ভাই এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী (৩৫) ও মামাতো ভাই মো. আরাফাতের (৩২) ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। কর্মস্থলে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে মগনামা ইউনিয়নের বাজারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন জানান, আজ সকালে এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী ও মো. আরাফাত মোটরসাইকেলে করে তাদের কর্মস্থল চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দিকে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি মগনামা বাজারপাড়া এলাকায় পৌঁছালে মগনামা ইউপি মহুরিপাড়ার মমতাজ,খোরশেদ,রোকন,জসিম,জালাল,ছলিম,আরিফ,ভেট্টু মিস্তি,আবু ছিদ্দিক বাদশাসহ আরো কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে তাঁদের গতি রোধ করে হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা কিরিচ ও লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ ওরফে মাদুসহ স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেনঃমমতাজও তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে তাঁর ভাই এনায়েত উল্লাহকে হত্যার চেষ্টা চালান। নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাঁর ভাইকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। ঘটনার পর থেকে মগনামা ইউপি চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মগনামার ফুলতলা স্টেশন, লঞ্চঘাট ও কাজির মার্কেট এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে দুপুর ১২ টার দিকে পুলিশ মুহুরীপাড়া এলাকায় অভিযানে গেলে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। এসময় মুহুরীপাড়া মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে লোক জড়ো করা হয়। তখন নারীরাও লাঠি-সোটা হাতে ঘর থেকে বের হন। এসময় পুলিশ নাজেম উদ্দিন (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ মগনামার মুহুরী পাড়া এলাকায় গেলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর একযোগে আক্রমণ করতে বলা হয়।এসময় নারীদের সামনে দিয়ে অস্ত্র-শস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর সংঘবদ্ধ আক্রমণ চালানো হয়েছে। তাঁদের আক্রমণে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। এদিকে পুলিশের ওপর হামলার খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান। এসময় তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা শান্ত থাকুন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। মগনামায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবৈধ অস্ত্র অভিযান চলবে। পেকুয়া থানার ওসি বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।