নিজস্ব প্রতিবেদক:
বনবিভাগ, স্থানীয় গ্রাম আদালত, চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এমইউপি সদস্যের আদেশ তোয়াক্কা না করেই ছোট ছয় ভাইকে বঞ্চিত করেই পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নেয় আপন বড় ভাই ছৈয়দ নুর।
শুক্রবার (৮ই মার্চ) পি এম খালী ইউনিয়নের মুহসিনিয়া পাড়া এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর-পশ্চিম পার্শ্বে মরহুম সাহেব মিয়ার উত্তরাধিকারি সম্পত্তির উপর তাহার বড় সন্তান ছৈয়দ নুর ও দৌহিত্র মোঃ আশেক কারো কোন আদেশ তোয়াক্কা না করেই পাহাড়ের উপর অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া যায়।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, সাত সন্তানের পিতা মরহুম মরহুম সাহেব মিয়ার রেখে যাওয়া সম্পত্তির বেশিরভাগ অংশই তাহার বড় ছেলে ছৈয়দ নুর বেআইনী ভাবে দাবি করছে বলে উল্লেখ করেন মরহুমের অবশিষ্ট ছয় সন্তান ও এলাকাবাসীরা।
পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে পাহাড়ি জায়গার ভাল অংশটি (৩/৪ অংশ) বড় ছেলে ছৈয়দ নুর দাবি করলে তা অপর ছয় ভাই তা মানতে নারাজ হলে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ মিমাংসা স্বরূপ সার্ভেয়ার এনে জায়গাটি মাপঝোপের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন করে দেয়।
চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হতে না হতেই পুনরায় বড় ছেলে ছৈয়দ নুর সন্তান সহ সকলে ছয় ভাইয়ের উপর আবারো নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ ও মেম্বার নুরুল আবছার বরাবর অভিযোগ করলেও বড় ছেলে ও তাহার সন্তান আশিক বিচার মিমাংসায় দ্বিমত পোষণ করে এবং রাতারাতি ঐ পাহাড়ের উপর অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে।
এতে অপর ছয় ভাইয়ে লোকজন বাধা সৃষ্টি করলে তাদের উপর হুমকি-দমকি চালায় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।
মরহুম সাহেব মিয়ার তৃতীয় পুত্র ছৈয়দ কামাল বলেন, বড় ভাই ও তার সন্তান আশিকের অবৈধ স্থাপনার বিরূদ্ধে স্থানীয় গ্রাম আদালত পি এম খালী ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করলে আমাদের আমাদের দা, ছুরি, লাঠি দিয়ে মারতে আসে এবং কেন বিচার দিলাম বলে মারার জন্য এগিয়ে আসলে স্থানীয়রা এতে বাধা সৃষ্ঠি করে। চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ অত্র এলাকার মেম্বার নুরুল আবছার সহ ৬নং ওয়ার্ডের জামাল উদ্দিন, ৫নং ওয়ার্ডের সাইফুল ইসলাম সোহাগ মেম্বার ও ১নং ওয়ার্ডের অহিদু মেম্বারকে পাঠালে তারা উভয় পক্ষকে কাজ না করতে বললেও বড় ছেলে ছৈয়দ নুর তাতে কানাতিপাত করেনি। মাছুয়াখালী এলাকা থেকে লোকজন এন রাতারাতি অবৈধভাবে কাজ শুরু করে। এতে বনবিভাগের পি এম খালী বিটের রেঞ্জ অফিসার ফারুক আহমদকে অবহিত করলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
স্থানীয় এক ব্যক্তির জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, ৭পুত্র ও ৪কন্যা সন্তানের পিতা মরহুম সাহেব মিয়ার রেখে যাওয়া সম্পদ উভয়ই আইনত সমান ভাগে পেলেও বড় ছেলে তার ভাগে যতটুকু পাওনা রয়েছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পাহাড়ের নিচু অংশ থেকে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নিলে এতে মার্ডার হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে আমি মনে করি।
উক্ত ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের এমইউপি সদস্য নুরুল আবছার মুঠোফোনে জানান, এর আগেও অনেকবার বিচার সালিশ হয়েছে, সার্ভেয়ার এনে যার যার পাওনা সম্পত্তি বন্টন করে দিলেও দিলেও বড় ছেলে ছৈয়দ নুর ও তার সন্তানেরা তা মানতে নারাজ। পরবর্তীতে রবিবারে বিচারের তারিখ থাকলেও তারা রাতারাতি ঐ স্থানে স্থাপনা তৈরি করে। ইউনিয়ন পরিষদের এই সালিশ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এঘটনায় কয়েক দফায় স্থানীয় সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত ছৈয়দ করিম ও তার ছেলে আশিক এতে কর্নপাত করেননি। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীরা কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অভিযোগ করেন। তাৎক্ষনিক বিষয়টি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ কর্মকর্তা এটি পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য যে, মরহুম সাহেব মিয়ার সাত সন্তান হলেন ছৈয়দ নুর, আবুল কালাম, ছৈয়দ কামাল, আবুল কাশেম, ছৈয়দ রাহমোস্তফা , ছৈয়দ নাসির উদ্দিন, ছৈয়দ দেলোয়ার হোছন। জমির পরিমাণ তিন কানি।