নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবিত্র মাহে রমজান মাসের রহমতের দিন। রহমতের দিন হলেও মানুষের মধ্যে এর গুরুত্ব লক্ষ্যহীন। ইফতার সময়ের ঠিক খানিকটা পূর্বেই সদরের পি এম খালী ইউনিয়নের বাংলাবাজারের দক্ষিণ নয়াপাড়া এলাকা পানের দোকানদার মোঃ রিদুয়ানুল হকের অসহায় পরিবারের প্রতি চালায় অমানবিক নির্যাতন, ভাংচুর ও লুটপাট।
পরিবারের সহধর্মিণীর উপর অমানবিক নির্যাতন চালায় পার্শ্ববর্তী এলাকার রেহেনা আকতার নামের প্রভাবশালী মহিলা।
১৭ মার্চ(রবিবার) ইফতারের পূর্বেই বাংলাবাজারের দক্ষিণ নয়াপাড়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে পূর্বের জমিবিরোধের উদ্দেশ্য হাসিল করে নেয় অভিযুক্ত রেহেনা।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, সামান্য একটি ছাগলের বিষয় নিয়ে এই ঘটনার উৎপত্তি ঘটে। ভুক্তভোগী রিদুয়ান একজন বাংলাবাজার স্টেশনের পানের দোকানদার। জীবনের বেশিরভাগ সময় এই দোকানেই তার দিন কাটে। ছোট্ট এই পানের দোকানের আয় রোজগার নিয়ে পরিবারের মা, স্ত্রী ও ছোট প্রতিবন্ধী বোনের সংসার চলে। পার্শ্ববর্তী প্রভাবশালী মহিলা রেহেনা আকতার ও তার স্বামী নুরুল হুদা দীর্ঘদিনের সম্পত্তি বিরোধ জের ধরে এই অসহায় পরিবারের প্রতি হামলা, লুটপাট ও ঘর ভাংচুর চালায়।
ভুক্তভোগী রিদুয়ানের স্ত্রী উর্মি আকতারকে বেপরোয়া ভাবে মেরে মাঠিতে ফেলে চলে যায় অভিযুক্ত রেহানা। এতে ক্ষান্ত না হয়ে স্বামী নুরুল হুদা, ভাই খোকন, ছেলে রুহাত, ভাতিজা আবদুল্লাহ, মা নুর জাহান, খোকনের স্ত্রী, বোনের জামাই ছৈয়দ হোছন সহ প্রায় ১৭-১৮ জনের এক দলকে সাথে নিয়ে রিদুয়ানের ঘরেরর দরজা ভেঙ্গে ভিতরে অনুপ্রবেশ করে।
পরে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ও আড়াই ভরি স্বর্ণ, নগদ ১৫,০০০ টাকা ও ২০০৭ সাল থেকে চলমান মামলার দলিলপত্র সহ ফাইল লুট করে নিয়ে যায়, যে মামলার শুনানীর তারিখ ছিল ১৯শে মার্চ, ২০২৪ইং।
হামলার পর ভুক্তভোগী রিদুয়ান ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করলে তৎক্ষনাত এসআই নাজমুলের তত্ত্বাবধানে একদল ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং উক্ত ঘটনার বিস্তারিত তথ্যাবলী সংগ্রহ ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে।
পরে স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ডের এমইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহাগ কে অবহিত করে দুইপক্ষের সাথে কথা বলে স্থানীয় মিমাংসা জন্য দায়িত্ববন্টন করে চলে গেলেও দুইদিন পরও কোন ধরনের সুরহা মেলেনি এই অসহায় পানের দোকানদার রিদুয়ানের।
ভুক্তভোগী উর্মি আক্তারের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, পবিত্র এই রমজান মাসে ইফতারের আগে রেহেনা আকতার রোজা রাখা অবস্থায় আমার উপর হামলা ও অত্যাচার চালায়। যদিও আমার স্বামীর সাথে তাদের দীর্ঘদিনের জমি বিরোধের যে মামলা রয়েছে, তার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এবং আমাদের সবাইকে ভিটে ছাড়া করার জন্য লোকজন নিয়ে আমার উপর ও আমার পরিবারের প্রতিবন্ধী ননদ সাবেকুন্নাহারের উপর পিশাসিক নির্যাতন চালায়। এতে তারা ক্ষান্ত না হয়ে আমার ঘরের দরজা ভেঙ্গে আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র ভাংচুর করে বাসা থেকে আমার বিয়ের আড়াই ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১৫,০০০টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এবং আমার ছোট তিন বছরের নিষ্পাপ শিশুকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে তারা বিভিন্ন ভাবে মেরে ফেলার হুমকি-দমকি দিচ্ছে এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এতে আমরা খুবই নিরাপত্তাহীনতাই ভুগছি। তাই স্থানীয় চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রশাসনের আশ্রয়ের জন্য বিনীত প্রার্থনা করছি।
ভুক্তভোগী পানের দোকানদার রিদুয়ানুল জানান, জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রেহেনা ও তার স্বামী নুরুল হুদা প্রথম ধাপে আমার স্ত্রী উর্মি আক্তার ও বোন সাবেকুন্নাহার কে বেধরক মারধর করে। পরবর্তীতে রেশ কাটতে না কাটতেই রেহেনা ও তার স্বামী সহ ১৫-২০ জন মিলে আমার বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙ্গে আমার স্ত্রী, বোনের উপর অমানবিক নির্যাতন, ছুরি দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। তাদের আঘাতের পর বাড়ির আসবাবপত্র, রান্না ঘরের তৈজসপত্র। এছাড়া আলমিরা ভেঙ্গে আমার স্ত্রী উর্মি আকতারের আড়াই ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১৫০০০টাকা লুট করে নিয়ে যায়। হামলার আমি ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করলে তৎক্ষনাত এসআই নাজমুল হকের তত্ত্বাবধানে একদল ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং উক্ত ঘটনার বিস্তারিত তথ্যাবলী সংগ্রহ ও ভিডিওধারণ করে।