জিয়াউল হক জিয়াঃ
আগামী ২৮ নভেম্বর চকরিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। উক্ত নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বাচাঁয়ের মাধ্যমে দলীয় প্রতীক নৌকা দিয়ে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড। কিন্তু ১০টি মধ্যে ২টি ইউনিয়নে নতুন মুখ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে দুই নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন সহ নৌকা প্রতীক দিয়ে যোগ্য প্রার্থী প্রমাণের বড় ধরণের চমক দেখিয়েছেন মনোনয়ন বোর্ড। গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এদিকে, উপজেলায় অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কোনাখালী ও কাকারা ইউনিয়নে পছন্দের প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন বা নৌকা প্রতীক বঞ্চিত করায়,উক্ত এলাকায় তাদের কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা গ্রামীণ সড়কের পাশে ‘কলাগাছ’ রোপন করে বিক্ষোভ করেছেন।এতে দুই ইউনিয়নে হাজার-হাজার নেতাকর্মীরা ঐদিনের সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কলাগাছ রোপন করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা। জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের একটি তালিকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ। এতে চকরিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাছাইকৃত তালিকা রয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড বৈঠক করে চকরিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিষয়টি চুড়ান্ত করে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে। ওই তালিকায় কোনাখালী ইউনিয়নের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই বারের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি দিদারুল হক সিকদার এবং কাকারা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সাহাব উদ্দিনের নাম না থাকায় তাদের কর্মী-সমর্থকরা ক্ষোভে এ কর্মসূচি পালন করেন। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, সুদীর্ঘ ১১বছর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি। একবিন্দু পরিমাণও জনগণের কাছ থেকে দূরে সরে যায়নি। ইউনিয়ন আ:লীগের সভাপতি হিসেবে যখন থেকে দায়িত্ব পেয়েছি তখন থেকে দলের তৃণমূলের প্রতিটি নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে আছি। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন ও গ্রামকে শহরে পরিণত করতে এলাকার ব্যাপক নানা অবকাঠামো উন্নয়ন করেছি। কেন্দ্র থেকে যখন মনোনয়ন দেয়া হইনি এ কথাটি এলাকার জনসাধারণ ও দলীয় নেতাকর্মীরা জেনেছে তখন এলাকার মানুষ ক্ষোভে রাস্তায় নেমে কলাগাছ রোপন করে প্রতিবাদ করেন।
তিনি আরও বলেন,আমি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হলেও মানুষের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হইনি। যার প্রমাণ কোন ঘোষণা ছাড়াই নেতাকর্মী ও জনসাধারণ রাস্তায় ক্ষোভে নেমে আসে। অপরদিকে, কাকারা ইউনিয়নে মনোনয়নবঞ্চিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাহাব উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোন ধরণের কলঙ্খের তিলক পড়েনি। স্বচ্ছ রাজনীতি করে এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠায় ইউনিয়নবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। তিনি দাবি করেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ মনোনয়ন যাচাই বাছাই করে আমার নামের তালিকা ১ নম্বরে স্থান দিয়ে কেন্দ্রের পাঠায়। কিন্ত আমি আজ কালো টাকার কাছে হেরে গিয়ে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছি। আমাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে এ কথা শুনে হাজারো কর্মী-সমর্থক মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সড়কের পাশে কলাগাছ রোপন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি মহাসড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। তিনি আরও বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও আমার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের ভালবাসা ও সম্মান রক্ষার্থে ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে যাব।উক্ত নির্বাচনে বিজয়ী লাভের মাধ্যমে নেত্রীর কাছে প্রমাণ করব,কাকারাবাসীর কাছে কত জনপ্রিয় মানুষ আমি।