মহেশখালী প্রতিনিধিঃ
মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে হতে যাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম মেঘা কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর, সিঙ্গাপুর প্রজেক্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ।এসব উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের সুবাধে অন্যতম ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হয়েছে মাতারবাড়ীর প্রধান সড়ক। কিন্তু প্রধান সড়কের ফুটপাত দখল হওয়ায় মানুষকে চলাচলে হিমসিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত, দূর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে অনেককেই। বিশেষ করে মাতারবাড়ী মাইজ পাড়া ( তৈয়্যবিয়া মাদরাসা সংলগ্ন) সড়কে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কটি ইট, বালু, স্ক্রাব্ (পরিত্যক্ত মালামাল) এবং টেম্পো গাড়ি দিয়ে দখল করে রাখা হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা রাস্তার ফুটপাত না নিজস্ব আঙ্গিনা। কারণ ইট, বালু, স্ক্রাব্ এবং টেম্পো গাড়ি রাস্তার পাশে রাখার কারণে সারাদিন যানজট লেগেই থাকে, অনেককেই প্রতিনিয়ত পড়তে হচ্ছে দূর্ঘটনার কবলে। তেমনি জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি।এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জনসাধারণ । তাদের দাবি, ফুটপাত ও সড়কটি দখলমুক্ত করে জনগনের চলাচলের উপযোগী করে তোলার। জানা যায়,মোজার মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ ইসলাম (৩৫),তালেব আলীর ছেলে মোহাম্মদ রইছন (৩৩) ফজলুল করিমের ছেলে মোজাম্মেল হক দীর্ঘদিন যাবত ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কারো কথা তোয়াক্কা করছেন না তাঁরা।এমনকি যদি কেউ প্রতিবাদ করে বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানি করা হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান,রাস্তার উভয় পাশে মালামাল এবং গাড়ী রাখার কারণে আমরা হাঁটতে পারিনা। প্রতিনিয়ত আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। কর্তৃপক্ষ এগুলো খেয়াল করছেন না। রাস্তার দুই পাশে স্ক্রাব্, ইট এবং টেম্পো গাড়ি রেখে যানজট সৃষ্টি করছে। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমরা ফুটপাত দখলমুক্ত করতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মাতারবাড়ী তৈয়্যবিয়া মাদরাসা সংলগ্ন প্রধান সড়কটির উভয় পাশে ইট, কংকর এবং পরিত্যক্ত মালামালে ভরপুর। রাস্তার দুপাশে তাদের মালের পশরা সাজিয়ে রেখেছেন দখলবাজরা। আবার গাড়ীতে পণ্য সামগ্রীও তুলা হচ্ছে ফুটপাতের উপরে। যার কারণে যানজট লেগেই আছে, বন্ধ হয়ে গেছে ফুটপাত। ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারছেননা পথচারীরা। বাধ্য হয়ে প্রধান সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের। বাড়ছে দূর্ঘটনার আশংকা, আবার অনেকে পড়ছে দূর্ঘটনার কবলে। পথচারীদের অভিযোগ, দখলবাজরাই ফুটপাত দখল করে রেখেছে। সাধারণ মানুষ কিভাবে ফুটপাত ব্যবহার করবে? ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীদের চলাচলের ব্যবস্থা করার দাবি তুলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ফুটপাত দখলের কারণে ২০২০ইং সালের শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) হাজ্বী মোহাম্মদ হোসাইনের একমাত্র পুত্র -ওয়াকিদ হোসাইন (রাইছি) সড়ক দূর্ঘটনায় নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করে। এমনিভাবে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষকে দূর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে। তারপরেও দখলবাজদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্ক্রাব্ (পরিত্যক্ত মালামাল) ব্যবসায়ি মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, আমি যা করতেছি,অন্যায় করতেছি।এইভাবে রাস্তা দখল করে ব্যবসা করা আমার উচিত নই।আমি সবসময় খেয়াল রাখি যেন দূর্ঘটনা না হয়।তিনি আরো বলেন,আমার সামনে অনেকেই ইট ব্যবসা করে,আমার দোকান আছে, তাদের দোকান ও নেই।
আর অন্যদিকে ইট ব্যবসায়ি রমিছ উদ্দিন (রইছ) বলেন, অন্যরা করতেছে তাই আমিও করতেছি।যদি তারা যদি মালামাল সরিয়ে ফেলে আমিও সরিয়ে ফেলব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইট ব্যবসায়ি মোজাম্মেল বলেন, আমার অল্পসংখ্যক ইট রয়েছে,এগুলো বিক্রয় হয়ে গেলে আর ইট আনব না। স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন নাছির বলেন,আমি ফুটপাত দখলমুক্ত করতে দীর্ঘদিন যাবত তাদেরকে বলে আসতেছি,কিন্তু তাঁরা কথা শুনছেনা। আপনারা ঐ বিষয়ে ওনাদের সাথে কথা বললে ভালো হয়। এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন,যদি কেউ ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে আমরা তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।