এম এ হাসান:
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের উপকূলীয় ইউনিয়ন টেকনাফ সদর ও বাহারছড়া সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় প্রতিনিয়ত মালয়েশিয়া মানব পাচারের এয়ারপোর্টে পরিনত হয়েছে। শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ সহ স্থানীয় হতদরিদ্র লোকজন দালালের সিন্ডিকেট এর ফাঁদে পড়ে বঙ্গোপসাগর দিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের তুলাতুলী এলাকার মোজাফফরের ছেলে নুরুল বশর যায়যায়দিন কে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় জানান, দীর্ঘ ২ মাস ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর-পরেই স্থানীয় চিহ্নিত ৬/৮ জন দালালের যোগসাজশে আমার বাড়ি সামনে দিয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। এমনকি উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ ও শিশু সহ ছোট নৌকায় উঠিয়ে দেয়। এ সময় আমি তাদেরকে মানব পাচার কাজে বাধা দিলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এমনকি প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দেয়। উক্ত ঘটনা বিষয়ে আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ টেকনাফ মডেল থানার অভিযোগ ও করেছি।বর্তমানে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনদের সাথে বলে আরও জানাযায়, নানা প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফ সদরের তুলাতুলী ঘাট, হাবির ছড়া, মিঠা পানির ছড়া ঘাট ও বাহারছড়া বিভিন্ন ঘাটের সমুদ্র সৈকত এলাকার পাশ্ববর্তী বাড়ি ও ঝোপ-জঙ্গলে এনে জড়ো করে রাখে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে তাদের বাহির করে ছোট ছোট ফিশিং বোট দিয়ে করে গভীর সাগরে অবস্থানরত বড় ট্রলার উঠিয়ে দেয়। বড় ট্রলার গুলো প্রায় এক সপ্তাহ থেকে ১ মাস পর্যন্ত গভীর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করার পর ট্রলারের ধারণ ক্ষমতা চেয়ে অতিরিক্ত ২/৩ গুণ যাত্রী নিয়ে মালয়েশিয়ায় উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সাগর পথে চোরাইভাবে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারী দালালরা হলেন, টেকনাফ সদর তুলা তুলির হাফেজ আহমদ এর ছেলে শফিক (২৩) ও জসিম, মৃত আলি আহমদের ছেলে আজিজুল হক (আজু) (২৮), রোহিঙ্গা রফিক, নতুন পল্লান পাড়ার মৃত মোহাম্মদের ছেলে বশির আহম্মদ (বছু) সহ ৮ থেকে ১০ জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে বলে জানান তিনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ জানান, মানব পাচারের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক আমি ইতিমধ্যে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করেছি। আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন ঘাট হতে মালেয়শিয়া মানব পাচার হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাদের তালিকা তৈরির হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষে নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি। টেকনাফ কোস্টগার্ড স্টেশান কমান্ডার লেঃ কমান্ডার সৈয়দ তৈমুর পাশা জানান, মানব পাচার বিষয়ে আমরা বিভিন্ন সুত্র থেকে জেনেছি, মানব পাচারের সাথে জড়িত কারো সঠিক তথ্য পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আব্দুল আলিম জানান, মানব পাচারের বিষয়ে চিহ্নিত দালালদের সনাক্ত করা হবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখতেছি।