জিয়াউল হক জিয়া,চকরিয়াঃ
আগামী বুধবার কোরবানির ঈদ অর্থ্যাৎ ঈদুল আজহার দিন।এই দিনে ইসলাম ধর্মালম্বীরা ঈদের নামাজ শেষে গরু,মহিষ ও ছাগল জবাই করে কোরবানি দেয়।ফলে কামারের দোকানিরা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা,বঁটি,চুরি ও চাপাতি বিক্রয় এবং মেরামত করতে গিয়ে টুংটাং,সুনসান শব্দতে ব্যস্ত সময় পার করতো।কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর ধরে সারাদেশে করোনা সংক্রমণে লকডাউন বা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার ফলে সকল পেশাজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে।এতে করে আয়-রুজগার কমে যাওয়াই কোরবানি ঈদের আমেজ তেমন চোখে পড়ার মত নহে।সেই সুবাধে কক্সবাজারের চকরিয়ার ১৮ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় থাকা কামারেরা টুংটাং,সুনসান শব্দহীন অলস সময় কাটাচ্ছে।নেই গ্রাহক,হতাশ কামারেরা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়,চকরিয়া পৌর-সভার কামার পাড়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নস্হ হাট-বাজারে থাকা কামারের দোকানে খুবই অল্প সংখ্যক নতুন দা,বঁটি,চুরি ও চাপাতি তৈরী করে ঝুলিয়ে রেখেছে।চোখে পড়ার মত দোকানে কোন গ্রাহক দেখা যায়নি।তবে দোকানের ভিতরে সামান্য-সামান্য দা,বঁটি,চুরি মেরামত কাজ চলছে। দোকানিদের মুখে নেই ক্লান্তির হাসি।মলিন চেহারায় বসে আছেন তারা।
মেসাস আইরন ষ্টোরের মালিক কালু কর্মকার বলেন,দুই বছর যাবৎ লকডাউনে সময় পার করছি।অপর দিকে টুকিটাকি নতুন দা,বঁটি,চুরি ও চাপাতি যা বিক্রয় করতে পারতাম।এই বারে তাও হল না।কারণ কক্সবাজার উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন দেশের সংস্হার কর্তৃক দেওয়া ত্রাণের মধ্য এসব পণ্যেও থাকে।এখন রোহিঙ্গারা নিজেদের ব্যবহারের জন্য একটি রেখে বাকী গুলো বাজারে বিক্রি করে দেয়।এসব নিত্যপণ্য কিছু ব্যবসায়ীরা এনে কমদামে ভেনগাড়ী নিয়ে বাজারের বিক্রি করে চলছে।যার ফলে গত বছর আর এবছর আমি তেমন নতুন কোন জিনিস বিক্রি করতে পারেনি।এভাবে চলতে থাকলে হয়তো দোকানপাট বন্ধ করে,অন্য পেশায় চলে যেতে হবে।কেননা বর্তমান ব্যবসার ইনকাম দিয়ে নতুন লোহা ক্রয়,কয়লা ক্রয়,কর্মচারী বেতন,দোকান ভাড়া,বিদ্যুৎ বিল,জেনরেটরবিল,বাসা ভাড়া,গ্যাসবিল,ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা,সাংসারিক খরচ পোষিয়ে উঠা সম্ভব নহে।এছাড়া লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখলেও,সরকারী কোন ত্রাণ বা সহযোগিতা পাইনি।দৈনন্দিন জীবনের সময় পার করতে দিশেহার হয়ে পড়েছি বলে জানিয়েছেন।