হায়দার নেজাম:
সাধারণ জনগনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে যে সমস্ত টিসিবির পণ্য সাধারণ জনগনের কাছে পৌঁছানোর কথা সেটা না করে টিসিবির ডিলাররা বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ির সাথে আতাতকরে পণ্য গুলো বিক্রি করে দিয়ে সাধারণ উপকারভোগীর সাথে তেলেসমাতি খেলায় মেতে উঠছে বলে সাধারণ উপকারভোগীদের অভিযোগ ।
তথ্য সূত্রে জানাযায়, কক্সবাজার জেলায় এক লক্ষ পনের হাজার আটশত তিপ্পান্ন জন উপকারভোগীর জন্য ৩০ জন টিসিবির ডিলার নিয়োগ রয়েছে। যার মধ্যে কক্সবাজার সদরে ৬ জন, ঈদগাঁও উপজেলায় ৩ জন,রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ১ জন, পেকুয়া ২ জন,মহেশখালীতে ৫ জন, টেকনাফে ৭ জন, চকরিয়ায় ২ জন ও কুতুবদিয়ায় ১ জন টিসিবির ডিলার রয়েছে। প্রতি মাসে এক একটি ডিলার ১থেকে ২ বার খাদ্য গোদাম থেকে টিসিবির পণ্য ডিলাররা গ্রহণ করে থাকে। সে পণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল,চিনি ও ভোজ্য তেল। সরকারের পক্ষথেকে বলা রয়েছ, টিসিবির পণ্য গুলো সরকারের নির্ধারীত মূল্যে সাধারণ উপকারভোগী মানুষের কাছে বিক্রি করার জন্য। কিন্তু দুঃখ জনক হলে ও সত্য যে কিছু টিসিবির ডিলাররা অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে আতাত করে টিসিবির বেশ কিছু পণ্য বাজারে বিক্রি করে দেয়। এ নিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইনে লেখা লেখী হলেও টিসিবির ডিলার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের শক্ত সিন্ডিকেট হওয়ার কারণে আশানুরূপ কোন সাফল্য আসছে না।অন্য দিকে উপকারভোগীরাও সরকারের দেওয়া ন্যায্য মূল্যের পণ্য কিনতে পারছে না। সামনে আসছে রমজান মাস তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা যে যার মত করে মানুষের নিত্য দিনের চাহিদার পণ্য মজুদ করে রাখছে এ ধরনের খবর পেয়ে মাঠে নামে দৈনিক রূপালী সৈকতের একটি টিম। গত ৫ দিন ধরে বিভিন্ন বাজার তদারকি করা হয় যার মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার পৌর এলাকার বড় বাজার, খরুলিয়া বাজার, লিংকরোড এলাকা,বাংলা বাজার এলাকা, কোট বাজার, উখিয়া, কুতুপালং, নিলা বাজার, টেকনাফ সহ অসংখ্য দোকানে সরকারি টিসিবির পণ্য বিক্রি করার দৃশ্য চোখ পড়ে। সেখানে দেখা যায় অসাধু দোকানদাররা অনেকটা কৌশল অবলম্বন করে টিসিবির মোডক ও লগো চিড়ে ফেলে যেন বোঝা না যায় এটা টিসিবির পণ্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের চোখে ধুলো দেয়ার একটা ব্যর্ত চেষ্টা করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। জানার চেষ্টা করা
হয় এই টিসিবির তেলের বোতল আপনারা কোথায় পেলেন? জবাবে দোকানদারা কেউ বলেন আমরা ডিলারের কাছ থেকে নিয়েছি আবার কেউ অনেকটা কৌশলে অনেকটা চালাকির পরিচয় দিয়ে বলেন আমরা টমটম চালকের কাছ থেকে নিয়েছি। বাজার তদারকির ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ফ্রেবরুয়ারী( মঙ্গলবার) দুপুর তিনটার দিকে বিভিন্ন বাজারে তদারকী করতে গিয়ে মূহুর্তের মধ্যে চোখে পড়ে রামুর ফকিরা বাজারের মুদির দোকানে সারি সারি করে রাখা সরকারের দেয়া টিসিবির ভোজ্য তেলের ২ লিটারের বোতল। এ বিষয়ে রামু উপজেলার ইউএনও( ভারপ্রাপ্ত) নিরুপম মজুমদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমি সরাসরি ফকিরা বাজারে আসছি আপনারা অপেক্ষা করুন। কিছু সময় পর তিনি এসে রামু
ফকিরা বাজারের ওসমান সওদাগরের দোকান ও তার পাশের মুজিব সওদাগরের দোকানে অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ষাট পিচ ২ লিটারী তেলের বোতল জব্দ করে ও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে। ততক্ষণে অন্যান্য দোকানদাররা টিসিবির পণ্য নিজ নিজ দোকান থেকে সরিয়ে ফেলে। জব্দ হওয়া তেল গুলো উপস্থিত সাধারণ জনগন ও গণ্যমান্য মানুষের উপস্থিতিতে এতিমখানাতে দান করে দেন। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও অনুপম মজুমদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি তিনি দৈনিক রূপালী সৈকত কে জানান, টিসিবির পণ্য নিয়ে তেলেসমাতি কিছুতেই সহ্য করা হবে না। তানি আরো বলেন, আগামীতে আরো কঠোর থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যারা টিসিবির ডিলার রয়েছে তাদের উপর কঠোর নজরদারি করা হবে এবং যে সমস্ত অসাধু ব্যবসায়িরা টিসিবির পণ্য কিনে মজুদ করে বা বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে তিনি জানান।