শহীদুল ইসলাম, কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন উপলক্ষ্যে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় গ্যাস ও এলএনজি সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে ধরা’র নৌ- মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
“গ্যাস সম্প্রসারণ বন্ধ কর, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং এলএনজি প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ কর, গ্যাস নয়, সমাধান হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জীবাশ্ম জ্বালানির দ্রুত, ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত ফেজ-আউট, কয়লা থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর, জীবাশ্ম গ্যাস পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর, জীবাশ্ম গ্যাস মানুষের জন্য বিষাক্ত, জীবাশ্ম গ্যাস একটি ব্যয়বহুল জ্বালানি, গ্যাসের বিকল্প আছে এবং প্রাচ্যের দেশগুলোতে গ্যাস সম্প্রসারণ করা চলবে না।”
সহ বিভিন্ন রঙ্গের নানা শ্লোগান প্ল্যাকার্ডে তাঁদের দাবি তুলে দরেন।
বৃহস্পতিবার(৭ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় কুতুবদিয়ার ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাচীনতম দীর্ঘ পাইলটকাটা খানের মোহনায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতীয় সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা( ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ সুরক্ষা আন্দোলন(কেডিএসএ) র যৌথ উদ্যেগে এই নৌ- মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সিনিয়র সদস্য নুরুল কাদেরের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুতুবদিয়া উপজেলা মেরিন ফিসারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব, কৈয়ারিবল ইউপির সাবেক এমইউপি কপিল উদ্দিন, জেলে সংগঠক শওকত, জেলে প্রতিনিধি সুমন দাশ সহ আরে অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন, উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাগরে প্রায় তিন’শোর চেয়ে কম বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দেখা যাচ্ছে। আরও দেড়শো প্রজাতির মাছ সাগরে নেই। এগুলো বিলুপ্তি অথবা গভীর বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। তাই জনসচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার পাশাপাশি উন্নত বিশ্বকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার জন্য আহবান করেন তিনি।
সংগঠনের আহবায়ক এম, শহীদুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কুতুবদিয়া দ্বীপের দুই পাশে তথা বাঁশখাালী ও মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যাপক কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের ফলে দ্বীপে নানাবিধ অনুজীব রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। সবুজায়ন ধ্বংস হচ্ছে। ওই দুই কয়লা বিদ্যুতের রাসায়নিক বর্জ্য সাগরে পড়ে সাগরের মৎস্য প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে। সাগরের জীববৈচিত্র্যে ধ্বংস হচ্ছে। বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ এবং জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। সাগরে, নদী খালে লবনাক্ততা বৃদ্ধির ফলে জেলিফিশের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। ফলে সাগরে মাছের প্রজনন কমে আসছে। বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় জীবাশ্ম জ্বালানি গ্যাস এবং এলএনজি সম্প্রসারণ বন্ধ করে সহজ এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে জ্বীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার দাবী সহ সেই সাথে নবায়নযগ্য জ্বালানিতে উদ্বুদ্ধ হতে নীতি-নির্ধারকদের কাছে দাবী জানান তিনি।
উক্ত নৌ- মানববন্ধনে পাইলটকাটা খালের উপকারভোগী মৎস্যজীবি, কৃষক, লবণচাষীসহ বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার লোকজনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।