কাইছারুল ইসলামঃ
কক্সবাজারের মহেশখালীর গোরকঘাটা-জনতাবাজার মহাসড়কে থামছেনা দুর্ঘটনা। ৫৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৭.২৩ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করা হলেও যাত্রীদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।যাত্রী সুরক্ষা নেই বললেই চলে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি নির্মাণের ফলে মহেশখালীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন হলেও যাত্রী সুরক্ষা একেবারেই হুমকির মুখে। সড়কের দুই পাশে পথচারীদের হাঁটার জায়গা রাখা হয়নি। সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সড়কের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ মোড়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, ধর্মী প্রতিষ্ঠান সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়নি সংকেতের সাইনবোর্ড। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা।
জানা গেছে, ১০ নভেম্বর ভিড়িও কনফারেন্সের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবাইদুল কাদের সড়কটি উদ্বোধন করেন। অথচ সেই সড়কে নেই যাত্রী নিরাপত্তা।
আরও জানা গেছে, গোরকঘাটা বাজার, নতুনবাজার, টাইমবাজার, কালারমারছড়া বাজারে দিনের বেশির ভাগ সময় যানজট লেগে থাকে। সড়কের উপর গাড়ি পার্কিং, সড়ক ঘেষে অস্থায়ী দোকান নির্মাণ এবং গাড়ি থেকে মালামাল উঠানামার কাজ করায় এ তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অপরদিকে ইজিবাইকের সংখ্যাও বেড়েছে অধিক হারে। তাদের বেশিরভাগ চালক অদক্ষ ও অপেশাদার। সড়কে সিএনজি, বিদ্যুৎ চালিত রিক্সা, ইজিবাইক (টমটম) গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রধান সড়কের এসব অনিয়ম নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাড়ালেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের।
মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতিমাসে গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ জন দুর্ঘটনার শিকার রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের অনেকেই পঙ্গুত্ববরণের সম্ভাবনা রয়েছে। এর বাইরেও দুর্ঘটনার শিকার রোগীরা স্থানীয় বাজারে চিকিৎসা নেন। তাদের হিসেব হাসপাতালের রেজিস্টারে থাকে না।
যাত্রীরা জানান, মহেশখালীর প্রধান সড়কটি আগের চেয়ে প্রসস্থ করায় চালকরা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক চালক অন্য গাড়ির সাথে গতির প্রতিযোগীতায় নামে। এতে যাত্রীদের নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ে। চালকদের প্রশিক্ষণ ও তদারকির মাধ্যমে সড়ক আইন সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তবে চালকরা জানান, তারা সড়ক আইন মেনেই যাত্রী পরিবহণ করছেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী মহেশখালীর মহাসড়কটির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। রোড সাইন লাগানোর চুক্তি ছিলনা, তাই লাগানো হয়নি। তবে আগামীতে লাগানোর পরিকল্পনা আছে। রাস্তার দুইপাশে পথচারীদের হাঁটার পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হয়নি কেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, “রাস্তা নির্মানের সময় দুইপাশে পথচারীদের হাঁটার জায়গা রাখা হয়। এই সড়কের কোন অংশ জায়গা রাখা না হলে পূণরায় কাজ করা হবে। এই ব্যাপারে বক্তব্য নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।