আজিজুর রহমান রাজু,ঈদগাঁও:
বিষাক্ত কেমিক্যালে দূষিত খাল, নেই পরিবেশ ছাড়পত্র, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় মসজিদ, শিক্ষার্থী ও কৃষক জনস্বাস্থ্য হুমকিতে।
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড, পূর্ব গজালিয়া ডালার মুখ এলাকায় একটি চার দেয়ালঘেরা গরুর ফার্মের আড়ালে গোপনে পরিচালিত হচ্ছে একটি ভয়াবহ রাবার প্রসেসিং কারখানা। সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানার ভেতরে পড়ে আছে পুরনো ও মরিচাধরা কেমিক্যাল ড্রাম, ময়লায় আচ্ছন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণ ট্যাংক এবং পাইপের মাধ্যমে বিষাক্ত তরল পদার্থ সরাসরি পাশের খালে ফেলা হচ্ছে, যা পরিবেশ দূষণের জ্বলন্ত উদাহরণ।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহেদুল ইসলাম, আবুল কাসেম, মোহাম্মদ ইব্রাহিমসহ অনেকেই জানান, কারখানার দুর্গন্ধে পুরো এলাকা আবৃত হয়ে আছে। কৃষক মোহাম্মদ বাবুল, মুসলিম উদ্দিন ও নুরুল আলম বলেন, বিষাক্ত তরলে জমিতে ফসল হচ্ছে না, গাছপালা বিবর্ণ হয়ে মারা যাচ্ছে।
শুধু কৃষক নয়, পাশের মসজিদ ও হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ) নূরানী কেজি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও অভিযোগ করেছেন, দুর্গন্ধের কারণে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, “কারখানার পাশে আমাদের মাদ্রাসায় ক্লাস নেওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কেউ কেউ বমিও করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই কারখানার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র বা বৈধ কাগজপত্র। অথচ গত পাঁচ বছর ধরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মালিকপক্ষ কারখানাটি নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ভয়ভীতি বা মিথ্যা মামলার হুমকি দেওয়া হয়।
ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, নুরুল ইসলাম এবং ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জুবায়েদ উল্লাহ জুয়েল বলেন, “বহুবার অভিযোগ পেয়েছি। দুর্গন্ধ, ফসল নষ্ট, অসুস্থতাসব মিলিয়ে এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। আমরা চাই দ্রুত এই অবৈধ কারখানা বন্ধ হোক। অভিযোগের বিষয়ে কারখানার কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মোঃ ফারুকও কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
সম্প্রতি এলাকাবাসী, মসজিদের ইমাম, শিক্ষক ও পরিবেশবাদীরা একত্র হয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা দ্রুত কারখানাটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। ঈদগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল করিম ও পরিবেশবাদী জাহাঙ্গীর বাঙ্গালী সম্রাট বলেন, লোকালয়ে কেমিক্যালযুক্ত রাবার কারখানা স্থাপন পরিবেশ আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। একটি কারখানার জন্য শত শত মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।,প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া।