..
গরীব মানুষের চাওয়াগুলো খুবই সামান্য হয়। কেমন আছেন এটুকু জিজ্ঞেস করতেই তাদের চোখে আনন্দাশ্রু জমে যায়।
আগ বাড়িয়ে সালাম দিতেই তাদের সলজ্জ দেহখানা অপ্রত্যাশিত প্রশান্তিতে মুহ্যমান হয়ে পড়ে।
একটুখানি গুরুত্ব দিয়ে কথা বলতেই তারা সীমাহীন আনন্দ অনুভব করেন।
হাসপাতালে কিংবা প্রাইভেট চেম্বারে যখনই তাদের দেখি, তাদের অভিব্যক্তি, তাদের চাহিদাগুলোও ঠিক তা-ই থাকে। একটুখানি সহমর্মিতাই তাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
তাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ইন্ডিয়া, ব্যংকক কিংবা মাউন্ট এলিজাবেথ এর সফিস্টিকেটেড টেক্নোলজি থাকে না। বড়জোর সরকারি হাসপাতালে বিশাল লাইন ধরে পাওয়া একটা চিকিৎসাপত্র আর ফ্রি কিছু ওষুধই হয়তোবা তাদের অনেকের সর্বোচ্চ পাওয়া।
চেম্বারে কিংবা হাসপাতালে আসার সময় তারা তাই অনেক বছরের দেশি-বিদেশি কোন কর্পোরেট হাসপাতালের ফাইল বহন করে এনে তাদের বড়লোকি স্ট্যাটাস দেখানোরও তাগিদ অনুভব করেন না। তারা আমাকেই সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা এবং নির্ভরতার আসনে আসীন করে আমার কাছেই আসেন।
মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপে পিষ্ট সরকারি হাসপাতালে ‘যে কোন মূল্যে’ সীট কিংবা কেবিন যোগাড় করে দেবার আবদারও তারা করেন না। হাসপাতালের ফ্লোরে শুয়ে পাওয়া ন্যুনতম চিকিৎসাটাই তাদের জন্যে অনেক বড় পাওয়া।
এই গরীব মানুষগুলোকেই তাই আমার অসম্ভব পছন্দ। জীবনের শেষ দিন অবদি এই গরীব মানুষগুলোর ডাক্তার হিসেবেই তাই বেঁচে থাকতে চাই।
©️
শাহীন আবদুর রহমান,
২ জুন, ২০২১
কক্সবাজার।