মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কক্সবাজারে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত:পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে হবে-এডিসি শিক্ষা কক্সবাজার পৌরসভায় জনভোগান্তি ও দুর্নীতির ফাঁদে পৌরবাসী অধ্যাপক আজিজুর রহমানের পিতার মৃত্যুতে দৈনিক রূপালী সৈকত পরিবারের শোক শাহিন ডাকাতের সেকেন্ড ইন কমান্ড গর্জনিয়ার ত্রাস রহিম অধরা! পেকুয়ায় ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার চকরিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় মালবাহি ট্রাকের চালক-হেলপার আহত চকরিয়ায় শ্মশান থেকে রাজমিস্ত্রী সুমন বড়ুয়ার লাশ উদ্ধার শোক সংবাদ :টেকপাড়া নিবাসী অধ্যাপক আজিজুর রহমানের পিতা আলহাজ্ব ফয়েজ আহমদ মিয়া আর নেই ,আজ বাদ আছর নামাজে জানাজা চকরিয়ায় পৌরসভা ও ইউনিয়নে সেবাপ্রার্থীরা যেন বিড়ম্বনায় না পড়ে নির্দেশনায় বিভাগীয় কমিশনার ঈদগাঁওতে বিএনপির প্রয়াত নেতা কর্মীদের স্মরণ সভার প্রস্তুতি সভা যেন প্রবীণ নেতা কর্মীদের মিলন মেলা

খরুলিয়ায় পরকিয়া প্রেকিমের স্ত্রীর হাতে প্রহার, স্বজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১
  • ৮২৪ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
পরকীয়ার ঘটনায় বারবার ফেঁসে যাচ্ছিলেন কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া বাজারপাড়া এলাকার যুবতী তসলিমা (২৮)। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে নিজ শ্বশুর বাড়িতে থাকা অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকের স্ত্রীর হাতে বেদড়ক পিটুনির শিকার হন ওই যুবতী। কিন্তু আক্রান্ত হওয়ার পর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা লুটতে চেষ্টা করছে তসলিমা। এমনকি নিজের পরকীয়ার বিষয়টি ঢাকতে ঘটনায় জড়িতদের আড়াল করে শ্বশুরবাড়ির পরিবারের পাঁচ নিরীহ সদস্যকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

ঘটনার সাথে জড়িত না থাকা সত্বেও মামলায় সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আসামী করা হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ ওই যুবতীর সন্তান তুল্য দুই কিশোর ও বোন তুল্য তিন নারীকে। মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার ওই পাঁচ জন হলেন- খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফয়সাল (৩২), কলেজ ছাত্র মো. সাঈদ (১৭), আয়েশা ছিদ্দিকা (৩৮), খরুলিয়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষিকা শাহিদা ইয়াসমিন রুমি (২৯) এবং মরিয়ম (৫০)।
রহস্যজনক বিষয় হলো- ঘটনায় জড়িত হামলাকারী প্রেমিকের স্ত্রী ও তার দলবলকে উক্ত মামলায় আসামী করা হয়নি। আসামী করা হয়েছে নিকটাত্মীয়দের। কেনো এমনটি করলেন যুবতী তার কোনো সদুত্তোর খুঁজে পাচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা কেউই। প্রশ্ন উঠেছে- তাহলে কি পরকীয়া ঢাকতেই স্বজনদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা?
অভিযুক্ত যুবতী তসলিমা (২৮) ঝিলংজার খরুলিয়া এলাকার মৃত আমান উল্লাহর স্ত্রী। তিনি এখন বিধবা অবস্থায় আছেন।
মঙ্গলবার (গত ৬ এপ্রিল) একটি ভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তসলিমা তার ওই ৫ আত্মীয় স্বজনকে হয়রাণি মূলকভাবে নাম উল্লেখ করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহার দায়ের করে। এর দুই দিন পর ৯ এপ্রিল (শুক্রবার) এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে কর্তৃপক্ষ।
অথচ স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, দোকানদার ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন- সেদিন মারধরের ঘটনাটি ছিলো তসলিমার পরকীয়া সংক্রান্ত। তার প্রেমিকের স্ত্রী স্বদলবলে এসে ঘরে ঢুকে মারধর করে চলে যায়। এরপরে তাদেরকে আর এলাকায় দেখা যায়নি।
স্থানীয় দোকানদার রহিম জানান- ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে একটি অটোতে চড়ে ৪/৫জন মেয়েকে নামতে দেখেছেন। তাদের মুখ নেকাবে বাঁধা ছিলো। এদের কাউকেই আগে এখানে দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না তিনি। এরাই তসলিমার ঘরে ঢুকে মারধর করে ১৫/২০ মিনিট পর দ্রুত চলে যায়। একই কথা বললেন স্থানীয় অপর দুই দোকানদার রফিক ও আলমগীর।
জানা যায়- গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তসলিমার স্বামী আমান উল্লাহ প্রবাসে থাকা অবস্থায় মারা যায়। স্বামী প্রবাসে থাকার সুবাদে তসলিমা বিধবা হবার আগে পরে থেকেই পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলো খরুলিয়া ঘাটপাড়া এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী কামালের সাথে। এর মধ্যে স্বামী মারা গেলে তার অনুপস্থিতির কারণে তসলিমার এই পরকীয়ার বিষয়টি আরও বেশি প্রকাশ্যে আসতে থাকে। এমনকি এলাকায় একাধিকবার শালীসি বৈঠকও হয়েছিলো বলে জানিয়েছে সমাজের সর্দার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু শত চেষ্টা করেও কিছুতেই তসলিমার পরকীয়ার সম্পর্কটি ছিন্ন করা যায়নি। ফলে দুই পরিবারের মাঝে চরম অসন্তোষ ও অশান্তি বিরাজ করছিলো।
এর জের ধরে গত ৬ এপ্রিল তসলিমার প্রেমিক কামালের স্ত্রী আনিফা ওই হামলা চালায়। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে এমন ঘটনায় ফেঁসে গিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে মরিয়া তসলিমা ঘটালেন আরেক কান্ড। পরকীয়া সম্পৃক্ততা ধামাচাপা দিতে ওই হামলার দায় চাপান স্বজনদের উপর। এবং সে অনুযায়ী স্বজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষান্ত হয় তসলিমা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ার আনিফা সুলতানা নামে এক নারীর স্বামীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে আসছে তসলিমার। ওই নারীর স্বামীর নাম কামাল বলে জানা যায়। কামাল একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে কামাল তার স্ত্রী আনিফা সুলতানাকে বাড়ী থেকে মারধর করে বের করে দেন দু’মাস আগে। ফলে টাকার প্রলোভন দেখিয়েও তসলিমার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছে বলে মনে করেন কামালের স্ত্রী আনিফা।
তিনি প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান- তসলিমাকে এই অবৈধ সম্পর্ক ছেড়ে দিতে বলা হলেও সে কোনো কথা গায়ে মাখছিলো না। বারবার অগ্রাহ্য করে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছিলো। একারণে শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে তিনি তসলিমাকে নিভৃত করতে যান বলে দাবী করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত তসলিমার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন- শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার সন্তানের উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে এই হামলা চালিয়েছে। তার কোনো পরকীয়া প্রেমিক নেই। তসলিমার পরকীয়ার সম্পর্কে বেশ কিছু প্রমাণ সামনে এনে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি। পাশে থাকা তার ভাই উত্তেজিত হয়ে বলেন- ওই মেয়ের স্বামীকে যদি তার বোন ভাগিয়ে নিয়ে থাকে তাহলে ওই মেয়েকে সে লালন পালন করবে। এর বাইরে কোনো সমাধান নাই বলেও প্রতিবেদককে হুমকি দেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনীরুল গীয়াসের সাথে। তিনি বলেন- ঘটনা যেহেতু ঘটেছে সে হিসেবে স্বাভাবিক নিয়মে মামলা হয়েছে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না। তদন্ত করে শুধুমাত্র ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এবং তিনি ঘটনাটির বিভিন্ন দিক সম্পর্কেও অবগত আছেন বলে প্রতিবেদককে জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs