নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার:
কুতুবদিয়ায় আ’লীগের সমাবেশস্থলে প্রকাশ্যে সাংবাদিককে মারধরের মামলায় তদন্তের নামে বড় অনিয়ম করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। এতে মূল আসামীদের নাম বাদসহ আসামি পক্ষের সাজানো স্বাক্ষী যুক্ত ও প্রকৃত স্বাক্ষীদের মনগড়া তথ্য সাজিয়ে আদালতে চার্জশিট দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুতুবদিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সুজন দাশ আসামী পক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ মামলার বাদী সাংবাদিক মিজানুর রহমানের। এছাড়া মামলা তুলে নিয়ে আসামিদের সাথে আপোষ মীমাংসা করতে থানা পুলিশ চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। এতে মারধরের শিকার গণমাধ্যমকর্মী ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ও চরম উদ্বিগ্নে দিন কাটাচ্ছে।
মামলার এজাহার ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কৈয়ারবিল মলমচর এলাকায় একটি অসহায় পরিবারের সদস্যদের উপর হামলাসহ তাদের লাশের মাংস খুজে না পাওয়ার প্রকাশ্যে হুমকির একটি ভিডিও বাংলাদেশ প্রতিদিন ও এশিয়ান টেলিভিশন এবং দৈনিক রূপালী সৈকতের প্রতিনিধি মিজানুর রহমানের হাতে পৌঁছে। এর প্রেক্ষিতেই সংবাদ প্রকাশে জন্য ভিডিওটি যাচাই-বাছাই করতে জড়িতদের সাথে যোগাযোগ করলে হুমকি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর। এ বিষয়টিকে ইস্যু করে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ক্যামরা, মোবাইল ও মানিব্যাগ চিনিয়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে হামলা চালায়। এঘটনায় কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেবকে প্রধান আসামী ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আজমগীর খান মাতবরকে দ্বিতীয়, মোজাহিদুল ইসলাম প্রকাশ সেলিম মাতবরকে তৃতীয়, আরিফ বিন রিনাসকে চর্তুথ, সানজু রাকিবকে পঞ্চম, মো. মোজাহিদকে ষষ্ঠ, মো. নিহাল উদ্দিনকে সপ্তম রুবেলকে অষ্টম , উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মহিদুল হাসান হান্নান সহ নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনকে আসামী করে কুতুবদিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন গণমাধ্যম কর্মী মিজানুর রহমান। এ মামলায় ১, ২ ও ৩ নম্বর আসামীরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাঈদীন নাঁহী জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন। পরে, মামলার চার্জশিট পর্যন্ত জামিন দিয়েছে আদালত।
অবশেষে, ভুক্তভোগী গণমাধ্যম কর্মী ও তার পরিবার আপস-মীমাংসা না করায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুজন দাশ পক্ষপাতিত্ব করে মনগড়া মামলার চার্জশিট
আদালতে প্রেরণ করেন। তবে, চার্জশিটে মামলার ২ জন আসামি ছাড়া বড় অংকের মাধ্যমে সকল আসামিদের নাম বাদ দেয়া হয়। আসামিদের পক্ষে ২ জনকে স্বাক্ষী ও প্রকৃত স্বাক্ষীর তথ্য গোপন করা হয়। পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে ওই গণমাধ্যমকর্মী আদালতের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন। এই মামলার আসামি পক্ষের সাজানো স্বাক্ষী দুজনের মধ্যে মো. সোহেল ইতোমধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এছাড়াও প্রকৃত স্বাক্ষীর তথ্য গোপনসহ বড় অনিয়মে তদন্তে মনগড়া চার্জশিট দেন থানার উপ-পরিদর্শক সুজন দাশ।
এবিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা কুতুবদিয়া থানার উপ-পরিদর্শক সুজন দাশ বলেন, স্বাক্ষীরা যা বলেছে তা দিয়েছি।
এদিকে, অনিয়মের ভরপুরে তদন্তের বিরুদ্ধে ওই গণমাধ্যমকর্মী মিজানুর রহমানকে আদালতে না-রাজি পত্র জমা দেয়ার পরামর্শ দেন সাংবাদিক সমাজ নেতৃবৃন্দরা।