হ্যাপী করিম:
মহেশখালী উপজেলা কুতুবজোম ইউনিয়নের প্রদান সড়ক গোরাকঘাটা- ঘটিভাঙ্গা পর্যন্ত যাতায়াতের সড়কটির নাজেহাল অবস্থা। বেহাল সড়ক, দুর্ভোগে অর্ধসহস্র মানুষ পুরো কুতুবজোমে প্রায় ৩২ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখতে গড়ে উঠেছে সড়ক পথ। আর এই সড়ক পথকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে স্কুল। গড়ে উঠেছে সড়কের দুপাশে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। তবে এসব কিছুর সমন্বয়ে বর্তমান সময়ে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কুতুবজোমের মূল সড়কটি। সড়কটি প্রায় গোরকঘাটা থেকে ঘটিভাঙ্গা ২৪ কিলোমিটারের মতো লম্বা। বটতলী বাজারের প্রবেশে শুরু থেকে ঘটিভাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটিতে যেকোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সড়কটি গুরুত্বত্বপূর্ণ হওয়ার কারনে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী সহ প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে।
যোগাযোগের প্রধান সড়ক থেকে ইটের সলিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাকন্দ ও বড় বড় গর্ত। সে কারণে বর্ষার মৌসুমে আগে থেকে সড়কটি পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। যেকোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে কুতুবজোম যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় বসবাসকারী অর্ধসহস্র মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। দীর্ঘ বছর ধরে সড়কের এমন দশা থাকলেও কোনো কর্তৃপক্ষকে সড়কটি মেরামত করতে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। যে কারণে স্থানীয় ও ব্যবসায়ী মহলের লোকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদ গঠনের শুরুতে তৎকালীন সরকার কুতুবজোম যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে সড়কটি নির্মাণ করে দেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। এরপর দীর্ঘ বছর পার হলেও সড়কটি মেরামত করা হয়নি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। অফিস পাড়া থাকে মুখরিত। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গুলো হয় জমজমাট। সড়কের এমন পরিস্থিতির উন্নয়নে স্থানীয়রা এসময় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। ভাড়ায় চালিত টমটম চালক মানিক বলেন, রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। কিন্তু কিছুই করার নেই, পেটের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে অচিরেই রাস্তাগুলো সংস্কার করা উচিত।
স্থানীয় প্রবীণ রাজনীতিবীদ ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মাস্টার লেয়াকত আলী বলেন, আমার জন্মলঘ্ন থেকে সড়কটি দেখছি। দীর্ঘ বছর আগে তৎকালীন সরকার উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য সড়কটি নির্মাণ করে দিলেও অযত্নে, অবহেলায় এবং কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টির অভাবে সড়কটির এমন দশা হয়েছে। যদি সড়কটি মেরামত বা সংস্কার করে না দেওয়া হয় তাহলে কুতুবজোম টু উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়বে। তাই সরকারের উচিত জনসাধারণের কথা ভেবে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করে দেওয়া।
কুতুবজোম ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামাল বলেন, রাস্তাটির দূরবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে দুই মাস আগেও, ব্যবস্থা নিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলজিইডি একে-অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার সাধারন মানুষ, অতি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান কতৃপক্ষকে আবারো অনুরোধ জানান।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, মন্ত্রালয়ের সাথে সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আশাকরি অর্থবছরে দ্রুত এ সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে জানান, কুতুবজোমের গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি পানি উন্নয়ন বোর্ড মাটির কাজ করার পর স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের কাজ শুরু হবে, এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাজের কর্মপরিধি পাঠানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরে সড়কটি সংস্কারে কাজ শুরু করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।