মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
 সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদক নির্মুল সম্ভব -বাইশারীতে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মত বিনিময় সভায় পুলিশ সুপার কাওছার দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে : রামু সুজনের ইফতার মাহফিলে বক্তারা রুর‍্যাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে দোয়া  ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত চকরিয়া ডাকাতি মামলার তিন আসামীকে গ্রেফতার করেন পুলিশ লামায় ঋণের চাপে গলায় ফাঁস দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আত্মহত্যা পেকুয়ায় লবণমাঠ দখলে নিতে ফাঁকা গুলি ছুটলো র্দূবৃত্তরাঃআহত-১৬ চকরিয়ায় অস্ত্র,মাদক ও টমটম চুরি মামলা মিলে ৪ আসামী গ্রেফতার মহেশখালী প্রেস ক্লাবের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বাইশারী ইউনিয়ন যুবদল,ছাত্রদলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  মাতারবাড়ীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল

কক্সবাজার সিটি কলেজে আমূল পরিবর্তন শেষে অধ্যক্ষ ক্য থিং অং এর বিদায়।

রিয়াজ উদ্দিন
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৮ বার পঠিত

রিয়াজ উদ্দিন, কক্সবাজার:

কক্সবাজারে উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সিটি কলেজ তরুণ প্রজন্মের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের স্বাক্ষর রেখেছেন। একাধিকবার জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই কাক্সিক্ষত সফলতার পেছনে ছিলেন একজন ডায়নামিক অদম্য সাহসী যোদ্ধা। তার নাম অধ্যক্ষ ক্যথিং অং।

এই নামটি দীর্ঘদিন কক্সবাজারের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে জন্ম জন্মান্তরে। তবুও তার বিরুদ্ধে সমালোচনা, অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না। এই মানুষটি আগামী ১৫ জানুয়ারি প্রায় ২৫ বছর পর শেষ কর্মদিবস সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন। তার বিদায় বেলায় বর্তমান ও প্রাক্তন অজস্র শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শোকাভিভূত।

ইতোমধ্যে কক্সবাজারের সচেতন নাগরিকেরা তাকে শিক্ষাবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছেন। কক্সবাজারের সিভিল সোসাইটিজ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এমন আপাদমস্তক শিক্ষা সেবকের জুড়িমেলা ভার। তিনি সহজে সকলের মন জয় করতে পারতেন। সর্বজন গ্রহণযোগ্য তিনি। আমরা আশা করছি তার অবর্তমানে এই সাজানো গোছানো ডিজিটালাইজ কক্সবাজার সিটি কলেজে নতুন একজন দক্ষ আধুনিক সৎ অধ্যক্ষ বিদায়ী অধ্যক্ষের পদে স্থলাভিষিক্ত হবেন।

শুরুতে ছোট দোচালা ঘরে মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করা কক্সবাজার সিটি কলেজ আজ ৫টি বিশাল ভবন, প্রায় ৮ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী, ১৫৩ শিক্ষক, নিয়মিত উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রম বাদে ১৩টি বিষয়ে অনার্স, ৬ বিষয়ে মার্স্টাস নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত হয়েছে। পর্যটন নগরী হলেও শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা কক্সবাজার জেলাকে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত উচ্চ শিক্ষায় এগিয়ে নিচ্ছে জেলার এ আলোকিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

অধ্যক্ষ ক্য থিং অং তার দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দৃঢ়চেতা মনোবল নিয়ে নিজের সবটুকু দিয়ে সেই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানকে আজ দেশের অন্যতম উচ্চ বিদ্যাপীঠে পরিণত করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। তারই হাত ধরে কক্সবাজার সিটি কলেজ প্রথমে স্নাতক পরে স্নাতকোত্তর কলেজে পরিণত হয়।

কলেজের এক শিক্ষক জানান, ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ বর্তমান অধ্যক্ষ যোগদান করার পর কলেজের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সেই সময়ের সিটি কলেজ আর আজকের সিটি কলেজ আসমান জমিন পার্থক্য। মনে হচ্ছে, এটা স্বর্ণযুগ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় কলেজের মতো উন্নত পাঠাগার (প্রায় ২০ হাজার বই), প্রত্যেকটি বিভাগে নিজস্ব সেমিনার, পদার্থবিজ্ঞান ও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজী, (আইসিটি ল্যাব ৪ টি) ও সিএসই বিষয়ে অত্যাধুনিক উন্নত বিজ্ঞানাগারে স্বয়ংসম্পূর্ণ কক্সবাজার সিটি কলেজ। এছাড়াও কলেজের অবকাঠামোর কথা যদি বলতে হয় সে ক্ষেত্রে দুটি ছয় তলা বিশিষ্ট ভবন, একটি চারতলা বিশিষ্ট ভবন, একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন, একটি দুইতলা বিশিষ্ট লাইব্রেরি ভবন, দুটি টিনশেড একতলা ভবন, মনোরম সৌন্দর্য্য বেষ্টিত শহীদ মিনার সমৃদ্ধ কক্সবাজার সিটি কলেজ।

এছাড়াও কলেজের প্রায় প্রতিটি ক্লাসরুম, ল্যাব এবং বিভগীয় অফিস রুম শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং ২৫টি শ্রেণিকক্ষে টিভি সিস্টেমের ডিজিটাল বোর্ডে (প্রতিটি ৬০ ইঞ্চি) সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কক্সবাজার সিটি কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস। এটি ১০৪টি সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেন স্বয়ং অধ্যক্ষ, কলেজে পাঠদানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ যোগাতে অধ্যক্ষ সব সময় উপস্থিত থাকেন।

কলেজের সাবেক গভর্নিং বডির সভাপতি ও দাতা সদস্য অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, এক সময় সিটি কলেজ একটি ছোট ভবন এবং সামান্য শিক্ষক শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়। ২০০০ সালের পর ধারাবাহিক উন্নয়নে সিটি কলেজ এখন লাখো মানুষের স্বপ্নের দিশারি হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।

বর্তমান নতুন গভর্নিং বডির সভাপতি মহেশখালী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন বলেন, বাল্যকাল থেকে সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং কে দেখে আসছি। তিনি যেমন সৎ তেমনি অমায়িক। নিরহংকার নির্ভেজাল কক্সবাজার শহরের সম্ভ্রান্ত রাখাইন পরিবারের সন্তান তিনি। আমার দেখামতে সচ্ছতা দক্ষতার সঙ্গে সিটি কলেজকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। যারা জেনে বোঝে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য। কারণ অনিয়ম, দুর্নীতি আমি দেখিনি।

যিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সিটি কলেজর হাল ধরে সফলভাবে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন তিনি অধ্যক্ষ ক্য থিং অং। তাকে যখন প্রশ্ন করা হয় আপনি আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কলেজের দায়িত্বে আছেন। এর মধ্যে আপনার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন। উত্তরে তিনি বলেন, আমি ২৫ বছর পরীক্ষা দিয়েছি। সাদা খাতা জমা দিই নাই। ফলাফল যা হবে আমি এতেই সন্তুষ্ট। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমি কোন অপরাধ, অনিয়ম ও দুর্নীতি করি নাই। ফলে আমার কোন ভয় নাই। এসব অভিযোগ মনগড়া ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs