নিজস্ব প্রতিবেদক।
কক্সবাজার জেলায় শুরু হয়েছে গণটিকা কার্যক্রম। শনিবার (০৭ আগষ্ট) সকাল ৮টা থেকে ৪টি পৌরসভা ও ৭১ ইউনিয়নের একযোগে টিকাদান শুরু হয়। কেন্দ্রগুলোতে তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে টিকা নিতে ছুটে আসছে মানুষ। সবার মাঝে দেখা গেছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা নিচ্ছে বয়োবৃদ্ধরাও।
কক্সবাজার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের টিকা কেন্দ্র আমেনা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকা নিতে আসা দৈনিক রূপালী সৈকত পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল হাশেম জানান,সরকারের নানা সচেতনমূলক প্রচারণয়া টিকা নিতে আগ্রহ চোখে পড়ার মত,তাই আমাদের সকলের উচিৎ নিজে টিকা নিয়ে অন্যজনকে টিকা নিতে উৎসাহিত করা এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত রাখা।তিনি টিকা কেন্দ্রে সকল কার্যক্রমে এলাকাবাসীকে সার্বিক সহযোগীতা করায় ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় তরুন সমাজকে ধন্যবাদ জানান এবং আগমীতেও এলাকাবাসীর পাশে থাকার আহ্বান জানান।
কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকা নিতে আসা বয়োবৃদ্ধ রাখাইন নারী ছেন মে জানান, ‘করোনা আক্রান্ত বাঁচতে টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভয়কে জয় করে বৃষ্টির মধ্যেও টিকা নিতে আসা।’
কক্সবাজার এয়ারপোর্ট পাবলিক হাই স্কুল কেন্দ্রে টিকা নিয়ে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘টিকা পাবো কিনা এ নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু কক্সবাজার পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠুভাবে টিকা গ্রহণ করি। এখন খুবই স্বস্তি লাগছে। তিনি অন্যান্যদেরও নির্ভয়ে টিকা নেওয়ার আহবান জানান। ‘
শনিবার সকালে এয়ারপোর্ট পাবলিক হাই স্কুলে টিকাদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, টিকার কোন সংকট নেই। জেলায় ২২৮টি বুথ রয়েছে। বুথগুলোতে ৪৫ হাজার ৬০০ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। আগামী ১৪ আগষ্ট থেকে পর্যায়ক্রমে সবাই টিকা পাবে। করোনা থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ঘরেই থাকুন, বিশেষ প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। সাবান—পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান ও কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী একেএম তারিকুল আলম।
কক্সবাজার পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ক শামিম আকতারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলী হাসান, কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ও কাউন্সিলর শাহেনা আক্তার পাখি উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। কক্সবাজারে ২ লাখ মানুষ টিকা নেওয়ার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেছে। ইতোমধ্যে ১ লক্ষ মানুষ টিকা নিয়েছে। ৫৭ হাজার মানুষ ২য় ডোজের জন্য অপেক্ষা করছে। আশা করছি সবাই টিকা পাবে পর্যায়ক্রমে।
সভাপতির বক্তব্যে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঝরে পড়ছে অনেক তাজা প্রাণ। এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পরিকল্পিতভাবে নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার পৌরসভা।’
পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান আরও বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ১০টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। টিকাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও নিরলসভাবে কাজ করছে। তাই টিকা নিয়ে কাউকে নিরাশ হতে হবে না। সবাই টিকা পাবে’।