শাহেদ হোছাইন মুবিন :
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং ঘনবসতি পূর্ণ শরনার্থী শিবির কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্রাশফায়ারের পর কুপিয়ে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত মাদ্রাসার ছাত্র আজিজুল হকের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার রাতে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহম্মদ সঞ্জুর মোরশেদ। ওসি সঞ্জুর মোরশেদ জানান, মামলায় আকিজ অলি নামের একজনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে হত্যার ঘটনায় আরও দুইজনকে শনিবার আটক করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় আটক ১০ জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলেন, ঘটনার পরপর আটক মুজিবর রহমান, ৮ নম্বর ক্যাম্পের দিলদার মাবুদ, মো. আয়ুব, ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. আমিন, আব্দুল মজিদ, ১৩ নম্বর ক্যাম্পের মো. আমিন, মো. ইউনুস, ১২ নম্বর ক্যাম্পের জাফর আলম, ১০ নম্বর ক্যাম্পের মো. জাহিদ ও মোহাম্মদ আমিন। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-৮-এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার জানান, হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় শুক্রবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে আটক আট জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। কক্সবাজার শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার থাইংখালী ক্যাম্প-১৮-তে বৃহস্পতিবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হামলা চালায় ৪০ থেকে ৫০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী। তাদের গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ৬ জন নিহত ও ১১ জন আহত হন। ব্রাশফায়ারের পর কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা গুলিতে নিহত নুর আলম হালিমের স্বজন ও ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক রূপালী সৈকত পত্রিকার উখিয়া উপজেলা প্রতিনিধিকে বলেন,‘প্রতি রাতে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষক-ছাত্র ও স্থানীয় রোহিঙ্গারা মিলে তাহাজ্জুতের নামাজ আদায় করেন। আমিও নিয়মিত তাহাজ্জুতে শরিক হই। তবে বৃহস্পতিবার আমার ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় মসজিদে দেরিতে যাই। ‘কিন্তু আমি গিয়ে দেখি মাদ্রাসার ভেতরে সবাই ছোটাছুটি করছে। অনেকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করছে। তাঁদের দেখে আমি দূরে সরে যাই। প্রায় আধা ঘণ্টা গোলাগুলি চলে। এরপর সন্ত্রাসীরা চলে যায়।’ ৬ জন নিহত হওয়ার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো সময়ে এসব ক্যাম্পে আরও সহিংসতা ঘটতে পারে বলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকে আশঙ্কা করছেন। তারা বলছেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গার স্রোত নামার পর গত চার বছরে এ রকম আতঙ্কজনক পরিস্থিতি আর কখনও তৈরি হয়নি। হামলার ভয়ে রোহিঙ্গাদের অনেক নেতা ভয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। উল্লেখ্য,উল্লেখ্য, ২২ অক্টোবর ভোরে উখিয়ার ১৮ নং ক্যাম্পে এর দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামীয়া মাদরাসায় মুসল্লিদের ওপর গুলিবর্ষণ এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ৮/১০ জনের সশস্ত্র গ্রুপ। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন ও পরে হাসপাতালে তিনজনের মৃত্যু হয়।