শাহেদ হোছাইন মুবিন:
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব ও কর্তব্যরত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন গেল বছরের সফলতা অর্জনের তথ্যাদি জানিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে। বৃহস্পতিবার ( ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২) সকাল ১১টায় উখিয়ার কোটবাজারস্থ ১৪ এপিবিএন সদর দপ্তরে এ মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন তথ্যাদি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ১৪আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক এসপি মোঃ নাইমুল হক পিপিএম।
এসপি নাইমুল হক বলেন,গত এক বছরে তাদের দায়িত্বাধীন ১৫টি ক্যাম্প এলাকা থেকে ২২০ জন কথিত আরসা সদস্য সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৮৬৮ জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। তৎমধ্যে ২০২ জন মাদক কারবারি আটক করা হয়েছে।তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবা, ৪০ কেজি ২০০ গ্রাম গাঁজা,৪৪৭ মিনিক্যান বিদেশী বিয়ার,দেশীয় তৈরী ৫ বোতল মদ,বিদেশী ৮৫০ঃমিঃলিঃ তরল মদ।ধৃতদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করে এসংক্রান্তে ১৮৬ টি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযানে ৭২ জন অবৈধ অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তাদের হেফাজত থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল,১৪টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও ২০০টি বিভিন্ন প্রকারের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃতদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতি প্রস্তুতি আইনে ২৩টি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। ১৪ এপিবিএন ও ক্যাম্প ইনচার্জদের সহযোগিতায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত গ্রেফতার করা ৪৬০ কে বিভিন্ন শাস্তি প্রদান করা হয়।ধৃতদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১০ লাখ ৯১ হাজার ৩০০ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। ৯৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কালোবাজারের বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ও ঔষধপথ্য জব্দ করা হয়।তৎমধ্যে ৪২ হাজার ৯৮৭ কেজি চাল,৩ হাজার ৩১২ লিটার সয়াবিন তৈল,৭৯ কেজি ডাল,৭০৪ কেজি চিনি,৩ হাজার ৪৫০ কেজি সুজি,১২ কেজি মরিচ,৪০০ পিস সাবান,১৫টি চিকন তারের বান্ডিল,১টি ওজন পরিমাপক যন্ত্র,সিনামিন ট্যাবলেট ৪৭ হাজার ৫০০ পিস,৪ বস্তা ঔষধ, ১৫ বস্তা সুজি রয়েছে।যা জব্দ পূর্বক স্ব-স্ব ক্যাম্প ইনচার্জ বরাবর হস্তান্তর করা হয়।
এ ক্ষেত্রে মোট ২৩৩ টি মামলা রুজু করা হয়। ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গত বছরের ১৯ জুন ৩টি স্বর্ণের বার সহ ৮০৪ গ্রাম স্বর্ণালংকার,২৬ লাখ ৩ হাজার ১২০ নগদ টাকা,৩১লাখ ৭৪ হাজার ৮০০ মিয়ানমার (মুদ্রা)কিয়াত উদ্ধার করা হয়।এসংক্রান্তে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করা হয়। রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া আজিজুল হক সহ জড়িত ১২ জন কে গ্রেফতার করা হয়।তৎমধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করে।গত বছরের ২২ অক্টোবর ৮ এপিবিএন’র আওতাধীন ১৮ নং ক্যাম্পে দারুল উলুম নাদাওয়াতুল উলামা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ৬ খুনের ঘটনায় জড়িত আরাফাত উল্লাহ কে ঘটনা সংঘঠিত হওয়ার সপ্তাহের মাথায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ১৪ এপিবিএন পুলিশের বিশেষ অভিযানিক দল।ধৃত আরাফাত ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।গত ১৬ জানুয়ারী ১৪ এপিবিএন পুলিশের বিশেষ অভিযানিক দল ড্রোন অভিযানের মাধ্যমে কথিত আরসার শীর্ষ নেতা আতাউল্লাহ জুনুনীর সৎভাই শাহ আলী কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।এসময় শাহ আলীর নিকট থেকে অস্ত্র, ইয়াবা ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় বলে জানন। এছাড়াও এসপি নাইমুল হক বলেন, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের কোন বাহিনী কিংবা গ্রুপ থাকতে পারবেনা।এ ব্যাপারে এপিবিএন পুলিশ সদা–সর্বদা সজাগ রয়েছে।ক্যাম্প এলাকায় কোন ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত করতে পারবেনা।মাদক, চোরাচালান, কালোবাজারি,অস্ত্র পাচার রোধ এবং রোহিঙ্গাদের দ্ধারা কোন স্থানীয় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার ব্যাপারেও ক্যাম্প পুলিশ সতর্ক রয়েছে। মতবিনিয় সভায় আরোও বক্তব্য রাখেন ১৪ এপিবিএন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শরীফুল ইসলাম,উখিয়ার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম আনোয়ার হোসেন, সাবেক সভাপতি রফিক উদ্দিন বাবুল,সাবেক সভাপতি সরওয়ার আলম শাহীন,সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির জুশান,
সহসাধারণ সম্পাদক আমানুল হক বাবুল,অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিক আজাদ,সাধারণ সম্পাদক পলাশ,বড়ুয়া,উখিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য শ.ম.গফুর,
অনলাইন প্রেসক্লাবের শহীদুল ইসলাম,জসিম আজাদ,রফিক মাহমুদ প্রমুখ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মাসুূদ আনোয়ার,পীযুষ চন্দ্র দাশ,সহকারী পুলিশ সুপার ও ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ ইমরানুল হক মারুফ,হাসান মাহমুদ,শাকিল আহমেদ , সুব্রত কুমার সাহা,ফরমান আলী সহ উখিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য,অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্য ও উখিয়ায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।